আল্লাহ যাকে অনুগ্রহ করেছেন; আপনিও যাকে অনুগ্রহ করেছেন; তাকে যখন আপনি বলেছিলেন, তোমার স্ত্রীকে তোমার কাছেই থাকতে দাও এবং আল্লাহকে ভয় কর। আপনি অন্তরে এমন বিষয় গোপন করছিলেন, যা আল্লাহ পাক প্রকাশ করে দেবেন আপনি লোকনিন্দার ভয় করেছিলেন অথচ আল্লাহকেই অধিক ভয় করা উচিত। অতঃপর যায়েদ যখন যয়নবের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল, তখন আমি তাকে আপনার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করলাম যাতে মুমিনদের পোষ্যপুত্ররা তাদের স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলে সেসব স্ত্রীকে বিবাহ করার ব্যাপারে মুমিনদের কোন অসুবিধা না থাকে। আল্লাহর নির্দেশ কার্যে পরিণত হয়েই থাকে।
And (remember) when you said to him (Zaid bin Hârithah ÑÖì the freedslave of the Prophet SAW) on whom Allâh has bestowed Grace (by guiding him to Islâm) and you (O Muhammad SAW too) have done favour (by manumitting him) ”Keep your wife to yourself, and fear Allâh.” But you did hide in yourself (i.e. what Allâh has already made known to you that He will give her to you in marriage) that which Allâh will make manifest, you did fear the people (i.e., Muhammad SAW married the divorced wife of his manumitted slave) whereas Allâh had a better right that you should fear Him. So when Zaid had accomplished his desire from her (i.e. divorced her), We gave her to you in marriage, so that (in future) there may be no difficulty to the believers in respect of (the marriage of) the wives of their adopted sons when the latter have no desire to keep them (i.e. they have divorced them). And Allâh’s Command must be fulfilled.
وَإِذْ تَقُولُ لِلَّذِي أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَأَنْعَمْتَ عَلَيْهِ أَمْسِكْ عَلَيْكَ زَوْجَكَ وَاتَّقِ اللَّهَ وَتُخْفِي فِي نَفْسِكَ مَا اللَّهُ مُبْدِيهِ وَتَخْشَى النَّاسَ وَاللَّهُ أَحَقُّ أَن تَخْشَاهُ فَلَمَّا قَضَى زَيْدٌ مِّنْهَا وَطَرًا زَوَّجْنَاكَهَا لِكَيْ لَا يَكُونَ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ حَرَجٌ فِي أَزْوَاجِ أَدْعِيَائِهِمْ إِذَا قَضَوْا مِنْهُنَّ وَطَرًا وَكَانَ أَمْرُ اللَّهِ مَفْعُولًا
Wa-ith taqoolu lillathee anAAama Allahu AAalayhi waanAAamta AAalayhi amsik AAalayka zawjaka waittaqi Allaha watukhfee fee nafsika ma Allahu mubdeehi watakhsha alnnasa waAllahu ahaqqu an takhshahu falamma qada zaydun minha wataran zawwajnakaha likay la yakoona AAala almu/mineena harajun fee azwaji adAAiya-ihim itha qadaw minhunna wataran wakana amru Allahi mafAAoolan
YUSUFALI: Behold! Thou didst say to one who had received the grace of Allah and thy favour: “Retain thou (in wedlock) thy wife, and fear Allah.” But thou didst hide in thy heart that which Allah was about to make manifest: thou didst fear the people, but it is more fitting that thou shouldst fear Allah. Then when Zaid had dissolved (his marriage) with her, with the necessary (formality), We joined her in marriage to thee: in order that (in future) there may be no difficulty to the Believers in (the matter of) marriage with the wives of their adopted sons, when the latter have dissolved with the necessary (formality) (their marriage) with them. And Allah’s command must be fulfilled.
PICKTHAL: And when thou saidst unto him on whom Allah hath conferred favour and thou hast conferred favour: Keep thy wife to thyself, and fear Allah. And thou didst hide in thy mind that which Allah was to bring to light, and thou didst fear mankind whereas Allah hath a better right that thou shouldst fear Him. So when Zeyd had performed that necessary formality (of divorce) from her, We gave her unto thee in marriage, so that (henceforth) there may be no sin for believers in respect of wives of their adopted sons, when the latter have performed the necessary formality (of release) from them. The commandment of Allah must be fulfilled.
SHAKIR: And when you said to him to whom Allah had shown favor and to whom you had shown a favor: Keep your wife to yourself and be careful of (your duty to) Allah; and you concealed in your soul what Allah would bring to light, and you feared men, and Allah had a greater right that you should fear Him. But when Zaid had accomplished his want of her, We gave her to you as a wife, so that there should be no difficulty for the believers in respect of the wives of their adopted sons, when they have accomplished their want of them; and Allah’s command shall be performed.
KHALIFA: Recall that you said to the one who was blessed by GOD, and blessed by you, “Keep your wife and reverence GOD,” and you hid inside yourself what GOD wished to proclaim. Thus, you feared the people, when you were supposed to fear only GOD. When Zeid was completely through with his wife, we had you marry her, in order to establish the precedent that a man may marry the divorced wife of his adopted son. GOD’s commands shall be done.
৩৭। স্মরণ কর ! যে আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও তোমার আনুকুল্য লাভ করেছিলো ৩৭২২, তুমি তাকে বলেছিলে, “তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে [ বিবাহের ] সম্পর্ক অটুট রাখ এবং আল্লাহকে ভয় কর।” কিন্তু তুমি তোমার অন্তরে যা গোপন করেছ আল্লাহ্ তা প্রকাশ করে দিতেছেন, ৩৭২৩। তুমি লোকভয় করছিলে , অথচ আল্লাহ্কেই ভয় করা তোমার পক্ষে অধিকতর সঙ্গত ছিলো ৩৭২৪। অতঃপর যায়েদ যখন যয়নবের সাথে প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতাসহ [ বিবাহ বন্ধন ] ছিন্ন করলো ৩৭২৫ , তখন আমি তাঁকে [ যয়নবকে ] তোমার সাথে পরিণয় সুত্রে আবদ্ধ করলাম, [ এজন্য ] যাতে [ভবিষ্যতে ] মুমিনদের পোষ্য পুত্রগণ নিজ স্ত্রীর সাথে [আনুষ্ঠানিকতাসহ ] বিবাহ সম্পর্ক ছিন্ন করলে সেই সব রমণীকে বিবাহ করায় মুমিনদের কোন বিঘ্ন না হয়। আল্লাহ্র আদেশ কার্যকর হবেই ৩৭২৬।
৩৭২২। ইনি হলেন জায়েদ ইব্ন হারিছা [রা ] যাঁকে রাসুলুল্লাহ্ [ সা ] পোষ্য পুত্র হিসেবে গ্রহণ করেন। ইনি ছিলেন , প্রথম যারা ইসলাম গ্রহণ করেন তাদের একজন। রাসুল [ সা ] তাঁকে ক্রীতদাসত্ব থেকে মুক্তি দেন এবং পোষ্যপুত্র রূপে গ্রহণ করেন। তাঁর সাথে রাসুল [ সা ] তাঁর ফুপাতো বোন জয়নাবের বিবাহ দেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ এই বিয়ে সুখের হয় নাই। দেখুন পরবর্তী টিকা।
৩৭২৩। যায়েদের সাথে রাসুলের ফুপাতো বোন জাহ্সের কন্যা জয়নাবের বিবাহ হয়। এই বিবাহ সুখের হয় নাই, জয়নাব ছিলেন উচ্চ বংশজাত। অপরপক্ষে যায়েদ ছিলেন ক্রীতদাস, যাকে রাসুল [ সা ] মুক্ত করেন এবং বিবাহ দেন। জয়নাব কখনও তাঁর বংশের গৌরব ভুলতে পারেন নাই , তিনি যায়েদকে নীচু দৃষ্টিতে দেখতেন। এখানেই ছিলো তাদের দাম্পত্য জীবনের সংঘর্ষের সূচনা। ব্যক্তিগত ভাবে যায়েদ এবং জয়নাব প্রত্যেকেই ছিলেন একজন অত্যন্ত ভালো মানুষ। তারা উভয়েই নবীকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে তারা পরস্পর পরস্পরকে বুঝতে পারতেন না, পরস্পরের সাথে খাপ খাওয়াতে পারতেন না। ফলে তাদের দাম্পত্য জীবন সংঘর্ষে পরিণত হয়। যায়েদ জয়নাবকে তালাক দেবার ইচ্ছা প্রকাশ করেন, কিন্তু রসুল [সা ] তাঁকে নিবৃত্ত করেন। জয়নাব ছিলেন রাসুলের [সা ] নিকট আত্মীয় এবং যায়েদের সাথে পরিণয় ছিলো রাসুলের [ সা ] একান্ত ইচ্ছানুযায়ী। এই বিয়েতে রাসুল [ সা ] দম্পত্তি যুগলকে উদার হাতে উপহার প্রদান করেন। এরূপ ক্ষেত্রে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে লোকে মন্দ বলবে এই ভয় রাসুলের [ সা ] অন্তরে স্থান লাভ করে। মুসলিম বিয়ে হচ্ছে একটি সামাজিক চুক্তি। হিন্দুদের মত এর সাথে জন্ম-জন্মান্তরের সম্পর্ক নাই। আল্লাহ্ মানুষকে অসুখী করতে চান না। তিনি মানুষকে সুখী দেখতে চান। বিবাহ বন্ধন হচ্ছে সেই সুখের চাবিকাঠি যা নারী ও পুরুষের পৃথিবীকে বেহেশতে পরিণত করে। সুতারাং এই বন্ধন যেনো দুঃখের কারণ না হয় এই আল্লাহ্র ইচ্ছা। সুতারাং আল্লাহ্র ইচ্ছায় এবং যায়েদ ও জয়নাবের ইচ্ছানুযায়ী বিবাহ বন্ধন বিচ্ছিন্ন হয়। আল্লাহ্র ইচ্ছাই শেষ পর্যন্ত কার্যকর হবে।
৩৭২৪। আল্লাহ্ পৃথিবীতে নারী ও পুরুষকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করেছেন সুখ ও শান্তিতে পৃথিবীর জীবনকে অতিবাহিত করার জন্য। কিন্তু যদি এই বন্ধন সুখের না, হয় তবে আল্লাহ্ তা অনুমোদন করেন না। ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে অসুখী বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করা অধিক গুরুত্বপূর্ণ , তা টিকে রাখা অপেক্ষা। তবে এই বন্ধন ছিন্ন করতে হবে উভয়েরই স্বার্থ রক্ষা করে , যাতে কেউ কোনও ক্ষতির সম্মুখীন না হয়। জয়নাবের একান্ত ইচ্ছা ছিলো যে তিনি মুসলিম উম্মতের মাতা হিসেবে সম্মানিত হবেন, এবং নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্মানের সহিত পালন করবেন। আল্লাহ্ তাঁর মনঃস্কামনা পূর্ণ করেন। দেখুন [ ৩৩ : ২৮ ] আয়াত এবং টিকা ৩৭০৬। এই আয়াতের উপদেশ হচ্ছে লোকলজ্জ্বাকে কোনও অবস্থাতেই আল্লাহ্র হুকুমের উপরে স্থান দেয়া চলবে না। আল্লাহ্র হুকুম হচ্ছে ন্যায় ও সত্যের প্রতীক। জীবনের সর্বাবস্থায়, সব কিছুর উপর তাঁর স্থান।
৩৭২৫। “প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা ” এক্ষেত্রে ‘ইদ্দতের ‘ সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরে বিবাহের কথা বলা হয়েছে। দেখুন [ ২ : ২৮ ] এবং টিকা ২৫৪।
৩৭২৬। এই ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ্ পৌত্তলিক আরবদের যুগ যুগান্তরের কুসংস্কারকে ধ্বংস করেন। দেখুন আয়াত [ ৩৩ : ৪ – ৫ ] এবং টিকা ৩৬৭১-৩৬৭২ যেখানে মোশরেক আরবদের আরও কিছু কুসংস্কারের বর্ণনা আছে।