হে নবী, আপনার পত্নীগণকে বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার বিলাসিতা কামনা কর, তবে আস, আমি তোমাদের ভোগের ব্যবস্থা করে দেই এবং উত্তম পন্থায় তোমাদের বিদায় নেই।
O Prophet (Muhammad SAW)! Say to your wives: If you desire the life of this world, and its glitter, Then come! I will make a provision for you and set you free in a handsome manner (divorce).
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِّأَزْوَاجِكَ إِن كُنتُنَّ تُرِدْنَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِينَتَهَا فَتَعَالَيْنَ أُمَتِّعْكُنَّ وَأُسَرِّحْكُنَّ سَرَاحًا جَمِيلًا
Ya ayyuha alnnabiyyu qul li-azwajika in kuntunna turidna alhayata alddunya wazeenataha fataAAalayna omattiAAkunna waosarrihkunna sarahan jameelan
YUSUFALI: O Prophet! Say to thy Consorts: “If it be that ye desire the life of this World, and its glitter,- then come! I will provide for your enjoyment and set you free in a handsome manner.
PICKTHAL: O Prophet! Say unto thy wives: If ye desire the world’s life and its adornment, come! I will content you and will release you with a fair release.
SHAKIR: O Prophet! say to your wives: If you desire this world’s life and its adornment, then come, I will give you a provision and allow you to depart a goodly departing
KHALIFA: O prophet, say to your wives, “If you are seeking this life and its vanities, then let me compensate you and allow you to go amicably.
রুকু – ৪
২৮। হে নবী ! তুমি তোমার স্ত্রীদের বল, ” পার্থিব জীবন এবং ইহার চাকচিক্য যদি হয় তোমাদের কামনা ৩৭০৬, তাহলে এসো, আমি তোমাদের জন্য ভোগ সামগ্রীর ব্যবস্থা করে দিই এবং সৌজন্যের সাথে তোমাদের বিদায় দেই।
৩৭০৬ এখান থেকে শুরু হয়েছে রসুলুল্লাহ্র [সা] পূণ্যবতী স্ত্রীদের বিষয়বস্তু [ Azwaj mutahharat ]। সমাজে তাদের অবস্থান আর দশজন স্ত্রীলোকদের মত ছিলো না। আল্লাহ্ তাঁদের জন্য বিশেষ দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ধারিত করেন। রসুলের [ সা ] জীবনের সর্বপেক্ষা আনন্দময় ও সুখী দাম্পত্য জীবন ছিলো বিবি খাদিজার সাথে পরিণয়। তাঁদের দাম্পত্য জীবন ২৫ বৎসর স্থায়ী হয়। তাঁদের পরস্পরের প্রতি আনুগত্য ছিলো স্বর্গীয়। আধ্যাত্মিক ও সামাজিক দিক থেকেও তা ছিলো অতুলনীয়। বিবি খাদিজা জীবিত অবস্থায় নবীজি অন্য কোনও স্ত্রী গ্রহণ করেন নাই। যা কি না তার সমসাময়িক সামাজিক অবস্থায় এক বিশেষ ব্যতিক্রম হিসেবে বিবেচিত। যখন বিবি খাদিজা পরলোকে গমন করেন, রসুলের [সা ] বয়স ছিলো ৫০ বৎসর। হয়তো বা রসুল [সা] জীবনে আর বিবাহ-ই করতেন না কারণ তিনি ছিলেন অত্যন্ত সংযমী পুরুষ, কিন্তু শুধুমাত্র দ্বিবিধ কারণে তিনি পুণঃবিবাহ করেন।
১) অসহায় দুঃখী বিধবাদের পুণঃর্বাসনের এক জলন্ত উদাহরণ স্থাপনের জন্য তিনি তা করেন। এসব বিধবারা নিজেদের এবং তাদের সন্তানদের ভরণ পোষণের ব্যবস্থা করতে অক্ষম ছিলো। যেমন ‘সউদা’ সন্তানসহ বিধবা হয় এবং সন্তানের লালন পালনের জন্য তাঁর সাহায্যের প্রয়োজন ছিলো।
২) রসুলের [সা ] দায়িত্ব ও কর্তব্য কর্মে সাহায্য সহযোগীতার জন্য। ইসলাম পুরুষ ও নারীর যুগল জীবনে বিশ্বাসী। নারীরও পুরুষের ন্যায় সামাজিক জীবনে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। সে হিসেবে রসুলের [সা] স্ত্রীদের ভূমিকা চিরজীবন বিশ্ব মুসলিম নারীদের জন্য অবিস্মরণীয় ও অনুকরণীয় হয়ে থাকা প্রয়োজন। এখানে রসুলের [সা] স্ত্রীদের ভূমিকা বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে তা শুধুমাত্র স্বামী সেবার মাঝেই সীমাবদ্ধ ছিলো না। সমাজের বিভিন্ন কর্মকান্ডে তাঁরা ভূমিকা রেখে গেছেন। হযরত আবু বকরের কন্যা হযরত আয়েশা ছিলেন বুদ্ধিমতী এবং বিদ্বান। হাদিসের তিনি ছিলেন একজন প্রধান প্রবক্তা। হযরত খুজাইসার কন্যা বিবি জয়নাব গরীব দুঃখীদের সেবায় আত্মনিয়োগ করেন, তাঁকে “গরীবের মাতা ” উপাধি দান করা হয়। অন্য আর এক জয়নাব ছিলেন হযরত জাহসের কন্যা। তিনিও গরীবের দুঃখ মোচনের জন্য কাজ করতেন। শারীরিক পরিশ্রম দ্বারা তিনি এই কাজের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতেন। তিনি চামড়া শিল্পে একজন দক্ষ ব্যক্তি ছিলেন। বিশেষ লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে নবীজির স্ত্রীগণের সামাজিক অবস্থান অত্যন্ত সম্মানীয় হওয়া সত্বেও শারীরিক পরিশ্রম থেকে রেহাই দেয়া হয় নাই। মুসলিম উম্মতের মাতা হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য তাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হতো। অলসতা বা বিলাসী জীবনযাত্রা তাদের জন্য ছিলো না। তাদের মনোরঞ্জনের জন্য বা কাজে সাহায্যের জন্য কোনও দাসী বাদী ছিলো না। এই আয়াতে বলা হয়েছে যে, যদি তারা শুধুমাত্র পার্থিব আরাম আয়েশ ও চাকচিক্য কামনা করে, তবে রসুলের [সা ] পবিত্র গৃহে তাদের স্থান নাই। যদি তারা তাই-ই করে তবে তারা তালাক গ্রহণ করতে পারে এবং আল্লাহ্ তাদের জন্য ব্যবস্থা করবেন। খায়বরের যুদ্ধ জয়ের পরে রসুলুল্লাহ্ [সা ] এর স্ত্রীগণ তাঁদের ভরণপোষণের জন্য কিছু অধিক অর্থ বরাদ্দের অনুরোধ করেন। এই আয়াতগুলিতে সেই ঘটনার প্রতি ইংগিত করা হয়েছে।