স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম ও ইসমাঈল কা’বাগৃহের ভিত্তি স্থাপন করছিল। তারা দোয়া করেছিলঃ পরওয়ারদেগার! আমাদের থেকে কবুল কর। নিশ্চয়ই তুমি শ্রবণকারী, সর্বজ্ঞ।
And (remember) when Ibrâhim (Abraham) and (his son) Ismâ’il (Ishmael) were raising the foundations of the House (the Ka’bah at Makkah), (saying), ”Our Lord! Accept (this service) from us. Verily! You are the All-Hearer, the All-Knower.”
وَإِذْ يَرْفَعُ إِبْرَاهِيمُ الْقَوَاعِدَ مِنَ الْبَيْتِ وَإِسْمَاعِيلُ رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
Wa-ith yarfaAAu ibraheemu alqawaAAida mina albayti wa-ismaAAeelu rabbana taqabbal minna innaka anta alssameeAAu alAAaleemu
YUSUFALI: And remember Abraham and Isma’il raised the foundations of the House (With this prayer): “Our Lord! Accept (this service) from us: For Thou art the All-Hearing, the All-knowing.
PICKTHAL: And when Abraham and Ishmael were raising the foundations of the House, (Abraham prayed): Our Lord! Accept from us (this duty). Lo! Thou, only Thou, art the Hearer, the Knower.
SHAKIR: And when Ibrahim and Ismail raised the foundations of the House: Our Lord! accept from us; surely Thou art the Hearing, the Knowing:
KHALIFA: As Abraham raised the foundations of the shrine, together with Ismail (they prayed): “Our Lord, accept this from us. You are the Hearer, the Omniscient.
১২৭। এবং স্মরণ কর! ইব্রাহীম ও ইসমাঈল [এই প্রার্থনার সাথে] কাবা গৃহের ভিত্তি স্থাপন করেছিলো, ‘হে আমাদের প্রভু! আমাদের [এই কাজ] গ্রহণ কর। নিশ্চয় তুমি সব কিছু শোন এবং সব কিছু জানো।’
১২৮। ‘হে আমাদের প্রভু! আমাদের তোমার [ইচ্ছার] কাছে আত্মসমর্পনকারী মুসলিম কর এবং আমাদের পরবর্তী বংশধরদের তোমার [ইচ্ছার] কাছে আত্ম সমর্পনকারী মুসলিম করো। আমাদের এবাদতের নিয়ম পদ্ধতি শিখিয়ে দাও এবং আমাদের প্রতি [অনুগ্রহ] কর। তুমি তো বারে বারে ক্ষমাশীল ও অত্যন্ত দয়ালু।
১২৯। ‘হে আমাদের প্রভু! তাদের মধ্য থেকে তাদের নিকট একজন রাসূল প্রেরণ কর, যে তাদের নিকট তোমার আয়াতসমূহ আবৃত্তি করবে, তাদের কিতাব এবং জ্ঞান ও প্রজ্ঞা শিক্ষা দেবে এবং তাদের পবিত্র করবে। তুমি তো শক্তিতে পরাক্রমশালী এবং প্রজ্ঞাময়।’ ১২৯
১২৯। আয়াত [২:১২৫]-এ কাবা গৃহের ইতিহাস, হযরত ইব্রাহীম ও হযরত ইসমাঈল (আঃ) কর্তৃক কাবা গৃহ পুনঃনির্মাণ, কাবা ও মক্কার কতিপয় বৈশিষ্ট্য এবং কাবা গৃহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন সম্পর্কিত বিধি বিধান উল্লেখিত হয়েছে। হযরত ইব্রাহীম ও হযরত ইসমাঈল কাবাকে পুনঃ প্রতিষ্ঠা করেন এবং একে পাক-সাফ করেন মুমিনদের জন্য। এই হিসেবে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) হচ্ছেন ইসলামের প্রথম প্রতিষ্ঠাতা। কাবা শরীফ হচ্ছে ইসলামের প্রতীক।
হযরত ইব্রাহীম (আঃ) আল্লাহ্র নির্দেশে সিরিয়ার সুজলা-সুফলা ভূখণ্ড ছেড়ে মক্কার বিশুষ্ক পাহাড় সমূহের মাঝখানে স্বীয় পরিবার পরিজন এনে ফেলে রাখেন এবং কাবাগৃহ নির্মাণে সর্বশক্তি নিয়োগ করেন। এরূপ ক্ষেত্রে অন্য কোন আত্মত্যাগী সাধকের অন্তরে অহংকার দানা বাঁধতে পারতো এবং সে তাঁর ক্রিয়া কর্মকে অনেক মূল্যবান মনে করতে পারতো। কিন্তু তিনি জানতেন আল্লাহ্র উপযুক্ত ইবাদত ও আনুগত্য কোন মানুষের পক্ষেই করা সম্ভব নয়। প্রত্যেকেই নিজ নিজ শক্তি সামর্থ অনুযায়ী কাজ করে। তাই আমল যত বড়ই হোক সেজন্য অহংকার না করে কেঁদে কেঁদে এমনি দোয়া করা প্রয়োজন যে, হে পরওয়ারদেগার! আমার এ আমল কবুল হোক।
আয়াত [১২৭, ১২৮, ১২৯]-এ হযরত ইব্রাহীমের মোনাজাত কত সুন্দর। বিনয়ের সাথে তিনি তাঁর সমস্ত এবাদত আল্লাহ্কে সমর্পন করছেন এবং আল্লাহ্কে শ্রবণকারী ও সর্বজ্ঞ বলে সম্বোধন করছেন। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) ভবিষ্যৎ বংশধরদের ইহলৌকিক ও পরলৌকিক মঙ্গরের জন্য আল্লাহ্র কাছে দোয়া করেছেন। তিনি তাঁর পয়গম্বর সুলভ অন্তর্দৃষ্টি থেকে বুঝতে পেরেছিলেন যে ভবিষ্যতে তাঁর বংশধরদের মধ্যে মোশরেকী প্রবেশ করবে। মক্কা হবে ৩৬০টি মূর্তির আবাসস্থল। পবিত্র নগরী জেরুজালেম হবে বেশ্যাদের দ্বারা কলুষিত। তাই তিনি আল্লাহ্র অনুগ্রহ প্রার্থনা করেছেন, আল্লাহ্র ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য। এবং মোনাজাতের শেষ আয়াতে [২:১২৯] দেখা যায় তিনি অন্তর্দৃষ্টিতে তার বংশে আমাদের শেষ নবীর আগমন প্রত্যক্ষ করেছেন এবং তার জন্য আল্লাহ্র করুণা ভিক্ষা করেছেন।
হযরত ইব্রাহীমের মোনাজাত আমাদের এই শিক্ষাই দেয় যে আল্লাহ্র কাছে নিজের সু-কর্মকে বিনয়ের সাথে নিবেদন করতে হয়। আত্ম-অহংকার যেনো আমাদের সুকৃতি নষ্ট করে না দেয়।