৪৪তম অধ্যায়
শল্যের প্রতি কটাক্ষসহকৃত কর্ণের আত্মশ্লাঘা
সঞ্জয় কহিলেন, “হে মহারাজ! অরাতিঘাতন কর্ণ মদ্ররাজকে এইরূপে নিবারণ করিয়া পুনরায় কহিলেন, ‘হে শল্য! তুমি নিদর্শনপ্রদর্শনের নিমিত্ত আমার নিকট যে উপাখ্যান কীৰ্ত্তন করিলে, আমি তাহাতে কখনই সমরে ভীত হইব না। বাসুদেব ও ধনঞ্জয়ের কথা দূরে থাকুক, যদি ইন্দ্রাদি দেবগণও আমার সহিত যুদ্ধ করেন, তথাপি আমার মনে ভয় সঞ্চার হয় না। তুমি বাক্যদ্বারা আমাকে কদাচ শঙ্কিত করিতে পারিবে না। তুমি আমার প্রতি বারংবার কটুক্তি করিতেছ, কিন্তু নীচেরাই পরুষবাক্য প্রয়োগপূর্ব্বক বল প্রকাশ করিয়া থাকে। হে দুর্ম্মতে! তুমি আমার গুণবর্ণনে অশক্ত হইয়া কেবল বিবিধ কুবাক্য প্রয়োগ করিতেছ; কিন্তু স্পষ্ট জানিও যে, কর্ণ ভীত হইবার নিমিত্ত এই সংসারে জন্মগ্রহণ করে নাই, আপনার বিক্রম প্রকাশ ও যশোলাভের নিমিত্তই সমুদ্ভূত হইয়াছে। হে শল্য! এক্ষণে তুমি কেবল আমার সহিষ্ণুতা, সৌহার্দ্দ ও মিত্রের ইষ্টসাধন, এই তিন কারণবশতঃ জীবিত রহিয়াছ। রাজা দুৰ্য্যোধনের গুরুতর কাৰ্য্য উপস্থিত হইয়াছে এবং তিনি সেই কার্য্যভার আমার উপর নিহিত করিয়াছেন; আর আমিও পূৰ্বে তোমার কটুক্তি ক্ষমা করিব বলিয়া প্রতিজ্ঞা করিয়াছি; বিশেষতঃ মিত্রদ্রোহ নিতান্ত পাপজনক; সেই সমস্ত কারণবশতঃই তুমি এতাবৎকাল জীবিত রহিয়াছ। হে মদ্ররাজ! আমি সহস্র শল্যসদৃশ; অতএব আমি সহায় না থাকিলেও অনায়াসে শত্রুগণকে জয় করিতে পারি।