৩৬তম অধ্যায় – জনমেজয়–প্রশ্নে বলরামের তীর্থসেবা বিবরণ
জনমেজয় কহিলেন, হে ব্রহ্মণ! পূৰ্ব্বে কৌরব ও পাণ্ডবপক্ষে যুদ্ধ উপস্থিত হইবার উপক্রম হইলে বলরাম কৃষ্ণকে আমন্ত্রণপূর্ব্বক ‘আমি দুৰ্য্যোধনের বা পাণ্ডুতনয়দিগের সহায়তা করিব না বলিয়া যাদবগণ সমভিব্যাহারে প্রস্থান করিয়াছিলেন। এক্ষণে তিনি কি নিমিত্ত সংগ্রামস্থলে উপস্থিত হইলেন এবং কিরূপেই বা যুদ্ধ দর্শন করিলেন, তৎসমুদয় সবিস্তার কীৰ্ত্তন করুন।
বৈশম্পায়ন কহিলেন, মহারাজ। মহাত্মা পাণ্ডবগণ, বিরাটভবনে অবস্থানপূর্ব্বক মধুসূদনকে ধৃতরাষ্ট্র সমীপে প্রেরণ করিলে মহামতি বাসুদেব প্রাণীসকলের হিতসাধনার্থ সন্ধির উদ্দেশ্যে অম্বিকানন্দনকে বিশেষরূপে হিতোপদেশ প্রদান করিয়াছিলেন, কিন্তু তিনি তৎকালে তাহাতে সম্মত হইলেন না। তখন পুরুষোত্তম কৃষ্ণ সন্ধিসংস্থাপনে কৃতকাৰ্য্য না হইয়া দুৰ্য্যোধনের নিকট বিদায় গ্রহণপূর্ব্বক বিরাট-নগরে প্রত্যাগমন করিয়া পাণ্ডবগণকে কহিলেন, ‘কৌরবগণ কালপ্রভাবে আমার বচন রক্ষা করিল না; অতএব চল, আমরা এই পুষ্যানক্ষত্রে যুদ্ধার্থে যাত্রা করি”
অনন্তর উভয়পক্ষের সৈন্য নির্ধারিত হইলে মহাবলপরাক্রান্ত রোহিণীতনয় কৃষ্ণকে কৌরবগণের সহায়তা করিতে অনুরোধ করিবেন, কিন্তু সে সময় বাসুদেব তাঁহার বাক্য রক্ষা করিলেন না। তখন যদুনন্দন বলদেব রোষপরবশ হইয়া যাদবগণ সমভিব্যাহারে সরস্বতী-তীর্থে প্রস্থান করিবেন। বলদেব তীর্থযাত্রা করিলে অরাতিনিপাতন ভোজরাজ কৃতবর্ম্মা দুৰ্য্যোধনের সাহায্যে প্রবৃত্ত হইলেন এবং বাসুদেব সাত্যকির সহিত পাণ্ডবপক্ষ অবলম্বনপূর্ব্বক পুষ্যানক্ষত্রযোগে কুরুক্ষেত্রে গমন করিলেন।
এ দিকে বলদেব গমনকালে পথিমধ্যে ভৃত্যবর্গকে কহিলেন, “তোমরা অবিলম্বে অগ্নি, যাজক, সুবর্ণ, রজত, ধেনু, বস্ত্র, অশ্ব, হস্তী, রথ, গর্দভ, উষ্ট্র, এবং তীর্থযাত্রার উপযোগী পরিচ্ছদ ও নানাবিধ দ্রব্যজাত আনয়ন করিয়া সারস্বত-তীর্থাভিমুখে যাত্রা কর।” মহাবল-বলদেব ভৃত্যগণকে এইরূপ আদেশ করিয়া ঋত্বিক [পুরোহিত], অন্যান্য ব্রাহ্মণ, সুহৃদ, রথ, গজ, অশ্ব, কিঙ্কর এবং গো, গর্দভ ও উষ্ট্রযোজিত বিবিধ যানে পরিবৃত হইয়া ক্রমে ক্রমে সারস্বত তীর্থ-সমুদয় পর্যটন করিতে লাগিলেন। পরিচারকগণ দেশে দেশে বৃদ্ধ, শিশু ও পরিশ্রান্ত অতিথিগণকে প্রদান করিবার উদ্দেশ্যে বিবিধ দানোপযোগী দ্রব্যের আয়োজন করিতে লাগিল। যে স্থানে যে ব্রাহ্মণ যে ভোজ্যবস্তু প্রার্থনা করিলেন, তাঁহাকে তৎক্ষণাৎ তাহা প্রদান করা হইল। মহাবল, বলরামের আদেশানুসারে ভৃত্যগণ স্থানে স্থানে অবস্থান করিয়া রাশি রাশি ভক্ষ্য ও পানীয় আহরণ করিতে লাগিল। সুখাভিলাষী ব্রাহ্মণগণকে মহার্য বস্ত্র, পৰ্য্যঙ্ক ও আস্তরণ প্রদান করা হইল। গমনাভিলাষীর নিমিত্ত যান, তৃষ্ণার্তের নিমিত্ত পানীয়, বুভুক্ষিতের নিমিত্ত সুস্বাদু অন্ন এবং রাশি রাশি বস্ত্র ও আভরণসমুদয় প্রস্তুত রহিল। বিপ্র বা ক্ষত্রিয়মধ্যে যিনি যাহা প্রার্থনা করিলেন, তিনি তৎক্ষণাৎ তাহা প্রাপ্ত হইলেন। কাহারও কুত্রাপি গমনে বা অবস্থানে কিছুমাত্র ক্লেশ হইল না। এইরূপে সেই তীর্থগমনপথ সকলেরই পক্ষে স্বর্গসদৃশ সুখাবহ হইয়া উঠিল। উহা বিপণি, আপন, পণ্যদ্রব্য এবং বিবিধ লতা, বৃক্ষ ও নানাবিধ রত্নে ভূষিত হইয়া অপূৰ্ব্ব শোভা ধারণ করিল। সংযমী মহাত্মা বলদেব মহা আহ্লাদে সেই পুণ্যতীর্থসমূদয়ে ব্রাহ্মণগণকে যজ্ঞদক্ষিণস্বরূপ কাঞ্চনময় শৃঙ্গশোভিত মহাবস্ত্র সমাযুক্ত সহস্র সহস্র পয়স্বিনী [দুগ্ধবতী] গাভী, নানা দেশজাত অশ্ব, মণিমুক্তা-প্রবালাদি রত্ন, বিশুদ্ধ স্বর্ণ, রৌপ্য, যান, দাস এবং লৌহ ও তাম্রময় ভাণ্ডসকল দান করিতে লাগিলেন। হে মহারাজ! অপ্রতিমপ্রভাব রোহিণীনন্দন এইরূপে সারস্বত তীর্থ-সমুদয়ে ভূরি ভূরি অর্থদান করিয়া ক্রমে ক্রমে কুরুক্ষেত্রে গমন করিলেন।
কুরুক্ষেত্র–তীর্থপ্রসঙ্গে প্রভাসাদি তীর্থকথা
জনমেজয় কহিলেন, হে তপোধন! আপনি সারস্বত তীর্থ সমুদয়ের গুণ, উৎপত্তি, কৰ্ম্ম ও ফলসমুদয় আনুপূর্বিক কীৰ্ত্তন করুন। উহা শ্রবণ করিতে আমার অতিশয় কৌতূহল জন্মিয়াছে।
বৈশম্পায়ন কহিলেন, মহারাজ! আপনি বহুতর তীর্থ এবং তৎসমূদয়ের উৎপত্তি ও গুণ শ্রবণ করুন। পূৰ্ব্বে ভগবান তারাপতি চন্দ্র যক্ষারোগে আক্রান্ত ও নিতান্ত ক্লিষ্ট হইয়া যে তীর্থে অবগাহনপূর্ব্বক শাপ হইতে মুক্তি লাভ ও পুনৰ্ব্বার স্বীয় তেজ অধিকার করিয়া সমস্ত বিশ্ব উদ্ভাসিত করিতেছেন, যদুবীর বলদেব সুহৃদ ও ঋত্বিকগণের সহিত সৰ্ব্বাগ্রে সেই সর্বোকৃষ্ট পবিত্র প্রভাসতীর্থে গমন করিবেন। ঐ তীর্থ চন্দ্রকে প্রভাসিত করিয়াছিল বলিয়া উহার নাম প্রভাস হইয়াছে।
জনমেজয় কহিলেন, হে তপোধন! ভগবান শশাঙ্ক কিরূপে যক্ষারোগে আক্রান্ত হইয়াছিলেন এবং কিরূপেই বা প্রভাস-তীর্থে অবগাহন করিয়া শাপবিমুক্ত হইলেন, আপনি সবিস্তারে তৎসমুদয় কীৰ্ত্তন করুন।
বৈশম্পায়ন কহিলেন, মহারাজ! পূৰ্ব্বকালে প্রজাপতি দক্ষ স্বীয় সপ্তবিংশতি কন্যা চন্দ্রকে দান করেন। উহারা নক্ষত্র; উহাদের দ্বারা লোকে কালনিরূপণ করিয়া থাকে। ঐ সমস্ত অলোকসামান্যা রূপলাবণ্যসম্পন্না বিশাললোচনা কন্যার মধ্যে রোহিণী সৰ্ব্বপেক্ষা সর্বাঙ্গসুন্দরী ছিলেন। ভগবান চন্দ্র তাঁহারই প্রতি প্রীতি প্রদর্শন ও তাঁহারই সহিত সুখসম্ভোগ করিতেন; তদ্দর্শনে অন্যান্য দক্ষতন্যারা নিতান্ত কুপিত হইয়া আবিলম্বে দক্ষ-সন্নিধানে গমনপূর্ব্বক কহিলেন, ‘পিতঃ! আমাদিগের প্রতি চন্দ্রের আর কিছুমাত্র অনুরাগ নাই। তিনি নিরন্তর রোহিণীর সহিত সুখসম্ভোগে কালযাপন করিয়া থাকেন, অতএব আমরা আপনার সমক্ষে অবস্থানপূর্ব্বক মিতাহারী হইয়া উপানুষ্ঠান করিব।” প্রজাপতি দক্ষ কন্যাদিগের বাক্য শ্রবণ করিয়া চন্দ্রের নিকট গমনপূর্ব্বক কহিলেন, ‘বৎস! তুমি পত্নীগণের প্রতি তুল্যরূপে প্রীতি প্রদর্শন কর, নতুবা তোমার ঘোরতর অধৰ্ম্ম হইবে।” পরে তিনি কন্যাগণের নিকট আগমন করিয়া কহিলেন, ‘তোমরা এক্ষণে চন্দ্র-সন্নিধানে গমন কর, তিনি আমার আদেশ ও উপদেশ অনুসারে তোমাদিগের প্রতি তুল্যরূপে অনুরাগ প্রদর্শন করিবেন।”
দক্ষকোপে চন্দ্রের যক্ষারোগাক্রমণ
অনন্তর দক্ষকন্যারা পিতার অনুমতিক্রমে পুনরায় চন্দ্রের ভবনে সমুপস্থিত হইলেন; কিন্তু চন্দ্র তাঁহাদিগের প্রতি কিছুমাত্র অনুরাগ প্রদর্শন না করিয়া প্রীতমনে রোহিণীরই সহিত কালযাপন করিতে লাগিলেন। তখন কন্যাগণ পুনরায় দক্ষ সন্নিধানে গমনপূৰ্ব্বৰ্ক কহিলেন, ‘পিতঃ! চন্দ্র আপনার আজ্ঞা লজ্ঞান করিয়াছেন। আমাদিগের উপর তাঁহার আর কিছুমাত্র প্রীতি নাই; অতএব এক্ষণে আপনার শুশ্রূষায় নিরত হইয়া আপনারই সন্নিধানে কালযাপন করিব।”
প্রজাপতি দক্ষ কন্যাগণের বাক্যশ্রবণে চন্দ্ৰসমীপে গমন করিয়া কহিলেন, ‘বৎস! তুমি পত্নীগণের প্রতি তুল্যরূপ প্রীতি প্রদর্শন কর, নচেৎ আমি নিশ্চয়ই তোমাকে শাপ প্রদান করিব।” হে মহারাজ! প্রজাপতি দক্ষ ঐ কথা কহিলেও ভগবান চন্দ্র তাঁহার বাক্যে অনাদর প্রদর্শনপূর্ব্বক রোহিণীর সহিত কালহরণ করিতে লাগিলেন।
তখন দক্ষকন্যারা নিতান্ত ক্রোধাবিষ্ট হইয়া পুনরায় পিতৃসন্নিধানে গমনপূর্ব্বক তাঁহার পাদবন্দনা করিয়া কহিলেন, ‘পিতঃ! চন্দ্র আমাদিগের সহবাসে এককালে বিমুখ হইয়াছেন। আমাদের প্রতি তাঁহার কিছুমাত্র স্নেহ নাই। আপনি বারংবার তাঁহাকে উপদেশ প্রদান করিলেন, কিন্তু তিনি আপনার বাক্য গ্রাহ্য করিয়া রোহিণীর সহিত কালহরণ করিতেছেন। অতএব আপনি আমাদিগকে রক্ষা করুন এবং যাহাতে চন্দ্র আমাদের প্রতি অনুরাগ প্রদর্শন করেন, তাহারও উপায় করিয়া দিন।”
তথন প্রজাপতি দক্ষ কন্যাগণের বাক্য শ্রবণে একান্ত ক্রোধাবিষ্ট হইয়া চন্দ্রের নিমিত্ত যক্ষার সৃষ্টি করিলেন। যক্ষা দক্ষ কর্ত্তৃক সৃষ্ট হইয়া চন্দ্রের শরীরে প্রবিষ্ট হইল। ভগবান চন্দ্র সেই যক্ষারোগে আক্রান্ত হইয়া দিন দিন ক্ষীণ হইতে লাগিলেন। তিনি উহা হইতে মুক্তিলাভ করিবার নিমিত্ত যত্নসহকারে বিবিধ যজ্ঞানুষ্ঠান করিলেন; কিন্তু কোনক্রমে রোগমুক্ত হইতে পারিলেন না। হে মহারাজ! চন্দ্র এইরূপে ক্রমে ক্রমে ক্ষীণ হইলে ওষধিসকল নিস্তেজ আস্বাদশূন্য ও উচ্ছিন্ন হইয়া গেল। তন্নিবন্ধন লোকসকল নিতান্ত কৃশ ও সংশয়াপন্ন হইয়া উঠিল।
তখন দেবগণ চন্দ্রের নিকট আগমন করিয়া কহিলেন, “হে শশলাঞ্ছন! [শশকচিহ্নযুক্ত–চন্দ্রের মধ্যগত শশকসদৃশ চিহ্নযুক্ত] তুমি কি নিমিত্ত এরূপ ক্ষীণ ও শোভাহীন হইয়াচ্ছ, তাহা আমাদিগের নিকট প্রকাশ কর। আমরা অবশ্যই উহার প্রতিবিধান করিব।” তখন ভগবান শশাঙ্ক যে নিমিত্ত শাপগ্রস্ত ও যক্ষারোগে আক্রান্ত হইয়াছেন, তাহা আদ্যোপান্ত সুরগণের নিকট কীৰ্ত্তন করিবেন। সুরগণ শশাঙ্কের মুখে তাঁহার স্কয়বৃত্তান্ত শ্রবণ করিয়া প্রজাপতি দক্ষের নিকট গমনপূর্ব্বক কহিলেন, “হে ভগবন! আপনি প্রসন্ন হইয়া চন্দ্রকে শাপ হইতে মুক্ত করুন। শশধর অতিশয় ক্ষীণ হইয়াছেন; উহার কলেবর এক্ষণে অল্পমাত্রই অবশিষ্ট আছে। উনি ক্ষীণ হওয়াতে ওষধি লতা ও বিবিধ বীজ বিনষ্ট হইতেছে। তন্নিবন্ধন আমাদিগেরও ক্ষয় উপস্থিত হইয়াছে। আমরা বিনষ্ট হইলে এই জগৎ নিতান্ত ব্যর্থ হইবে। অতএব আপনি এই সমস্ত অনুধাবন করিয়া চন্দ্রের প্রতি ক্রোধ সংবরণ করুন।”
তখন প্রজাপতি দক্ষ দেবগণের বাক্য শ্রবণ করিয়া কহিলেন, “হে সুরগণ! আমি যাহা কহিয়াছি, তাহা কদাচ অন্যথা হইবার নহে। কিন্তু আমি এক্ষণে একটি উপায় উদ্ভাবন করিয়া দিতেছি, তদ্বারা চন্দ্রের শাপশান্তি হইতে পারিবে। নিশাকর সারস্বত তীর্থে অবগাহন করিয়া পত্নীগণের প্রতি প্রতিনিয়ত তুল্যরূপ স্নেহ প্রদর্শন করুন, তাহা হইলে উনি পুনরায় পরিবর্ধিত হইবেন, সন্দেহ নাই। হে দেবগণ! আমার বাক্যানুসারে মাসমধ্যে পঞ্চদশ দিন চন্দ্রের নিত্য নিত্য ক্ষয় ও পঞ্চদশ দিন নিত্য নিত্য বৃদ্ধি হইবে। উনি এক্ষণে পশ্চিম সমুদ্রে গমনপূর্ব্বক সরস্বতী ও সাগরসঙ্গমে দেবদেব মহাদেবকে আরাধনা করুন, তাহা হইলেই পুনরায় পূৰ্বরূপ প্রাপ্ত হইবেন।”
প্রভাসতীর্থস্নানে চন্দ্রের রোগমুক্তি
হে মহারাজ! তখন ভগবান চন্দ্র মহর্ষি দক্ষের নির্দেশানুসারে অমাবস্যায় সরস্বতীতে গমন করিয়া প্রভাসখ্য তীর্থে অবগাহনপূর্ব্বক পুনরায় পূৰ্ব্বরুপ প্রাপ্ত হইয়া সমুদয় লোক উদ্ভাসিত করিতে লাগিলেন। অনন্তর দেবগণ প্রভাসে গমনপূর্ব্বক চন্দ্রকে লইয়া দক্ষের নিকট আগমন করিলেন। মহর্ষি দক্ষ তাঁহাদিগকে সাদর-সম্ভাষণপূর্ব্বক বিদায় দিয়া প্রীতমনে চন্দ্রকে কহিলেন, ‘বৎস! তুমি স্বীয় পত্নীগণ ও ব্রাহ্মণদিগকে কদাচ অবজ্ঞা করিও না, এক্ষণে দেবগণ সমভিব্যাহারে স্বগৃহে গমন করিয়া আমার আজ্ঞা প্রতিপালন কর।” তখন নিশানাথ দক্ষের নিকট বিদায় গ্রহণ করিয়া আপনার আলযে আগমন করিলেন। প্রজারাও হৃষ্টান্তঃকরণে পূৰ্ব্ববৎ কালযাপন করিতে লাগিল। হে মহারাজ! ভগবান শশাঙ্ক যেরূপে অভিশপ্ত হইয়াছিলেন এবং প্রভাসতীর্থ যেরূপে সৰ্বশ্রেষ্ঠ বলিয়া পরিগণিত হইয়াছে, তাহা আদ্যোপান্ত সমুদয় কীৰ্ত্তন করিলাম। ঐ তীর্থে ভগবান শশাঙ্ক প্রতি অমাবস্যায় স্নান করিয়া পরিবর্ধিত হয়েন। উহা চন্দ্রকে প্রভাসিত করে বলিয়া লোকমধ্যে প্রভাস নামে বিখ্যাত হইয়াছে।
অনন্তর মহাবল বলদেব চমষোদ্ভেদ-তীর্থে গমন করিলেন। তথায় তিনি প্রভূত দান, বিধিপূর্ব্বক স্নান ও এক রজনী যাপন করিয়া সত্বর উদপান-তীর্থে গমন করিলেন। হে মহারাজ! সরস্বতী ঐ স্থানে অন্তঃসলিলা হইলেও সিদ্ধগণ মহান শ্রেয়োলাভ এবং ওষধি ও ভূমির স্নিগ্ধতা অবলোকন করিয়া উহা প্রবাহিত হইতেছে, ইহা অনায়াসে বিদিত হইয়া থাকেন।