৩৫৪তম অধ্যায়
ধর্ম্মসন্দেহে ব্রাহ্মণের মনে ব্যাকুলতা
ভীষ্ম কহিলেন, “পূৰ্ব্বে অতি সমৃদ্ধিশালী মহাপদ্মনগরে ভাগীরথীর দক্ষিণতীরে এক অত্রিবংশসম্ভূত সৌম্যমূৰ্ত্তি ব্রাহ্মণ বাস করিতেন। ঐ ব্রাহ্মণ বেদপারদর্শী, ভ্রমপ্রমাদপরিশূন্য, সত্যানুরক্ত, সচ্চরিত্র, জিতক্রোধ, সন্তুষ্টচিত্ত, জিতেন্দ্রিয় এবং কুলধৰ্ম্মানুষ্ঠান, তপস্যা ও বেদাধ্যয়নে অনুরক্ত ছিলেন এবং ন্যায়পথে অর্থোপার্জ্জন করিয়া পরিবারবর্গের ভরণপোষণ করিতেন। ঐ সদ্ধৃত্তিসম্পন্ন অকলঙ্ককুলসমুৎপন্ন [নির্দ্দোষ বংশজাত] ব্রাহ্মণের বহুসংখ্যক পুত্র ছিল। কালক্রমে সেই পুত্রগুলি উপযুক্ত হইলে ব্রাহ্মণ ধৰ্ম্মানুষ্ঠানে সমধিক ব্যগ্র হইয়া চিন্তা করিতে লাগিলেন যে, বেদোক্ত ধৰ্ম্ম, শাস্ত্রোজ্ঞ ধর্ম্ম ও শিষ্টসমাচরিত ধৰ্ম্ম এই তিন প্রকার ধর্ম্ম বিদ্যমান রহিয়াছে, ইহার মধ্যে কোন প্রকার ধর্ম্ম আমার পক্ষে শ্রেয়স্কর; এক্ষণে আমি কোন্ ধৰ্ম্মই বা অবলম্বন করিব? দ্বিজবর এইরূপ চিন্তায় নিমগ্ন হইয়া বহুদিন অতিবাহিত করিলেন; কিন্তু কিছুই নির্ণয় করিতে পারিলেন না। কিয়দ্দিন পরে একদা এক ব্রাহ্মণ অতিথি হইয়া তাঁহার আবাসে উপস্থিত হইলেন। ব্রাহ্মণ তাঁহাকে দর্শন করিয়া ভক্তিভাবে যথাবিধানে তাঁহার পূজা করিলেন; অতিথিও ব্রাহ্মণকৃত পূজা গ্রহণপূৰ্ব্বক পরমসুখে তথায় উপবিষ্ট হইয়া পরিশ্রম শান্তি করিতে লাগিলেন।”