২৬৫তম অধ্যায়
আতিথ্যগ্ৰহণার্থ দ্রৌপদীর কোটিক সম্ভাষণ
বৈশম্পায়ন কহিলেন, হে রাজন! দ্রুপদরাজনন্দিনী কৃষ্ণা শিবিবংশাবতংস। কোটিকাস্যের এইরূপ বাক্য-শ্রবণানন্তর তাঁহাকে অবলোকন করিয়া শাখা পরিত্যাগ ও কৌষেয় উত্তরায় গ্রহণপূর্ব্বক কহিতে লাগিলেন, “হে নরেন্দ্ৰনন্দন! তোমার সহিত কথোপকথন করা মাদৃশী মহিলার নিতান্ত অনুচিত; কিন্তু এখানে এমন কোন পুরুষ বা নারী নাই যে, তোমার বাক্যের উত্তর প্রদান করে, সুতরাং আমাকে স্বয়ংই উত্তর করিতে হইল। আমি স্বধর্ম্মনিরত, বিশেষতঃ একাকিনী রহিয়াছি, তুমিও একাকী এখানে আসিয়াছঃ তন্নিমিত্ত তোমার সহিত আলাপ করা কোনক্রমেই বিধেয় নহে, তবে তোমাকে সুরথের পুত্র কোটিকাস্য বলিয়া অবগত হইয়াছি; এই নিমিত্ত তোমার সমীপে আপনার বন্ধুগণ ও কুলের পরিচয় প্রদান করিব।
“হে শৈব্য! আমি দ্রুপদ-রাজের কন্যা, আমার নাম কৃষ্ণা। আমি যুধিষ্ঠির, ভীম, অর্জ্জুন, নকুল ও সহদেব এই পঞ্চপাণ্ডবকে পতিত্বে বরণ করিয়াছি; তাঁহারা আমাকে এখানে রাখিয়া মৃগয়ার নিমিত্ত চারিদিকে গমন করিয়াছেন। মহারাজ যুধিষ্ঠির পূর্ব্বদিকে, ভীমসেন দক্ষিণদিকে, অর্জ্জুন পশ্চিমদিকে এবং নকুল ও সহদেব উত্তরদিকে গমন করিয়াছেন। তাঁহাদের আগমনসময় প্রায় সমুপস্থিত হইয়াছে। তোমরা বাহন হইতে অবতীর্ণ হইয়া ক্ষণকাল এই স্থানে অবস্থান কর। তাঁহারা আসিয়া তোমাদের যথেষ্ট সম্মাননা করিবেন; তৎপরে তোমরা অভিলষিত স্থানে গমন করিও। হে মহাত্মন! ধর্ম্মরাজ যুধিষ্ঠির একান্ত অতিথিপ্রিয়, তিনি তোমাদিগকে দেখিয়া যৎপরোনাস্তি প্রীত হইবেন সন্দেহ নাই।” পতিপরায়ণা দ্রুপদতনায়া কোটিকাস্যকে এই কথা কহিয়া সমাগত ব্যক্তিগণকে অতিথির ন্যায় পূজা করিবার মানসে পৰ্ণশালায় প্রবেশ করিলেন।