১৯৯. নববধূরূপা দ্রৌপদীর প্রতি আশীর্বাদ
একোনদ্বিশততম অধ্যায়।
বৈশম্পায়ন কহিলেন,—পাণ্ডবগণ সহায় হওয়াতে দ্রুপদের দেবতা হইতেও আর আশঙ্কা রহিল না। পুরনারীগণ কুন্তীকে পাইয়া তাঁহার নাম সংঙ্কীৰ্ত্তনপূর্বক চরণবন্দন করিলেন। মঙ্গলসূত্ৰধারিণী অবগুণ্ঠনবতী দ্রৌপদী শত্রুকে অভিবাদনপূর্বক কৃতাঞ্জলিপুটে বিনীতভাবে সমীপদেশে দণ্ডায়মান হইলেন। কুন্তী, সেই সুশীলা, সদাচারসম্পন্ন, সুরূপা, সৰ্বলক্ষণাক্রান্তা পুত্রবধুকে স্নেহসম্ভাষণপূর্বক আশীর্বাদ করিলেন, বৎসে! ইন্দ্রাণী ইন্দ্রের প্রতি, স্বাহা বিভাবসুর প্রতি, রোহিণী চন্দ্রের প্রতি, দময়ন্তী নলের প্রতি, ভদ্রা বৈশ্রবণের প্রতি, অরুন্ধতী বশিষ্ঠের প্রতি এবং লক্ষ্মী নারায়ণের প্রতি যেমন ভক্তিমতী ও প্রণয়কতী হইয়াছেন, তুমিও তত্ত্বগণের প্রতি তদনুরূপ হওঁ। হে ভদ্রে। তুমি যার সন্তান প্রসব করিবে, স্বামিসহ যজ্ঞে দীক্ষিত হইবে, তোমার সৌভাগ্যের পরিসীমা থাকিবে না। হে বৎস! তুমি অতিথি, গৃহাগত সাধু, বালক, বৃদ্ধ ও গুরুজনের সংকারে ব্যাপৃত হইয়া সময় যাপন করিবে। তোমা হইতে কুরুজাঙ্গল প্রভৃতি প্রধান প্রধান জনপদে রাজ। অভিষিক্ত হইবেন। অশ্বমেধ যজ্ঞে স্বামীদিগের বলবিক্রমার্জিত বসুমতী বিপ্রসাৎ করিয়া এবং পৃথিবীর উৎকৃষ্ট বস্তুজাত প্রাপ্ত হইয়া শত শত বৎসর পরম সুখে কালযাপন করিবে। হে বৎসে! অদ্য তোমাকে যেমন অভিনন্দন করিলাম, তুমি পুত্রবতী হও, পুনৰ্বার এইরূপ অভিনন্দন কবিব।
বৈশম্পায়ন কহিলেন, অনন্তর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কৃতদার পাণ্ডবদিগের যৌতুকস্বরূপ বিচিত্র বৈদুর্য মণি, সুবর্ণের আতরণ, নানাদেশীয়, মহাৰ্হ বসন, রমণীষ শয্যা, বিবিধ গৃহসামগ্রী, বহুসংখ্যক জাসদাসী, সুশিক্ষিত গজবৃন্দ, উৎকৃষ্ট ঘোটকাবলী, অসংখ্য রথ এবং কোটি কোটি রজতকাঞ্চন, শ্রেণীবদ্ধ করিয়া প্রেরণ করিলেন। ধর্ময়াজ যুধিষ্ঠির কৃষ্ণপ্রেরিত দ্রব্যসামগ্রী সকল আহ্লাদপূর্বক গ্রহণ করিলেন।
বৈবাহিক পর্বাধ্যায় সমাপ্ত।