১৬৬তম অধ্যায়
পাণ্ডবসমীপে ইন্দ্রের আগমন-পাণ্ডবাভিনন্দন
বৈশম্পায়ন কহিলেন, হে মহারাজ! রাত্রি প্রভাত হইলে ধনঞ্জয় প্রভৃতি ভ্ৰাতৃবর্গ রাজা যুধিষ্ঠিরকে অভিবাদন করিতেছেন, এমন সময়ে অন্তরীক্ষে মৃগ, ব্যাল ও পক্ষিগণের কোলাহলের ন্যায় বিবিধ বাদ্যধ্বনি, দেবগণের তুমুল কলরব, রথনেমিনিস্বন ও ঘণ্টাশব্দ সমুত্থিত হইল। অনন্তর দিব্যকান্তিসমুজ্জলকলেবরে পুরন্দর বিমানারূঢ় অন্সরাগণে পরিবৃত হইয়া কাঞ্চনের ন্যায়, পরিষ্কৃত মেঘের ন্যায় শব্দায়মান অশ্বযোজিত রথে আরোহণপূর্ব্বক কৌন্তেয়দিগের অস্তিকে আগমন করিলেন।
পাণ্ডবগণ মহাত্মা সুররাজকে অবলোকন করিবামাত্র প্রত্যুদগমনপূর্ব্বক ভূরিদক্ষিণাসহকারে বিধিবিহিতরূপে পূজা করিয়া পরামপ্রীত হইলেন। তেজস্বী ধনঞ্জয় দেবরাজকে প্ৰণিপাত করিয়া তাঁহার সমীপে ভৃত্যুবৎ দণ্ডায়মান রহিলেন। মহাতেজাঃ যুধিষ্ঠির ধনঞ্জয়কে বিনীতভাবে পবিত্র তাপসবেশে দেবরাজের সকাশে দণ্ডায়মান দেখিয়া প্রীতমনে তাহার মস্তকাঘ্রাণ করিলেন। ধীমান পুরন্দর অদীনমনঃ যুধিষ্ঠিরকে কহিলেন, “হে রাজন! আপনি এই অখণ্ড ভূমণ্ডলের শাসনকর্ত্তা হইবেন, তাহাতে সন্দেহ নাই। আপনার কল্যাণ হউক, এক্ষণে আপনি পুনরায় কাম্যকাশ্রমে গমন করুন। ধনঞ্জয় আমার নিকট হইতে সমুদয় অস্ত্ৰলাভ করিয়া আমার মহৎ প্রিয়কাৰ্য্য সম্পাদনা করিয়াছেন।” সহস্ৰলোচন এই কথা কহিয়া অন্সরা ও গন্ধর্ব্বগণসহ অমরাবতী প্রস্থান করিলেন।
যে বিদ্বান সংবৎসর ব্ৰহ্মচারী ও ব্রতচারী হইয়া ইন্দ্রের সহিত ধনেশ্বর গৃহবাসী পাণ্ডবগণের এই সমাগম অধ্যয়ন করেন, সে ব্যক্তি নির্ব্বিঘ্নে পরমসুখে শতবর্ষজীবিত থাকেন।