১৬২তম অধ্যায়
যোদ্ধা-প্ৰতিযোদ্ধা নির্ব্বাচন
“হে মহারাজ! অনন্তর রাজা যুধিষ্ঠির পৃথিবীর ন্যায় ধৈৰ্য্যশালী পদাতি, রথ, অশ্ব ও গজ, এই চতুরঙ্গসম্পন্ন সেনা বহির্গত করিলেন। ভীমপ্রমুখ মহাবীরগণ সেই স্থির সাগরসদৃশ বলসমুদয় রক্ষা করিতে লাগিলেন। অগ্নিবৰ্ণ ধৃষ্টদ্যুম্ন দ্রোণাচাৰ্য্যের সহিত যুদ্ধ করিবার নিমিত্ত সেনার অগ্রণী হইয়া গমন করিলেন এবং সৈন্য ও উৎসাহ অনুসারে শত্ৰুগণের সহিত রথীদিগকে যুদ্ধ করিতে আদেশ করিলেন। মহাবীর অর্জ্জুনকে সূতপুত্রের সহিত, ভীমকে দুৰ্য্যোধনের সহিত, ধৃষ্টকেতুকে শল্যের সহিত, উত্তমৌজাকে গৌতমের [কৃপাচাৰ্য্যের] সহিত, নকুলকে অশ্বত্থমার সহিত, শৈব্যকে কৃতবর্ম্মার সহিত, বার্ষ্ণেয় যুযুধানকে জয়দ্রথের সহিত, শিখণ্ডিকে ভীষ্মের সহিত, সহদেবকে শকুনির সহিত, চেকিতানকে শল্যের সহিত, দ্রৌপদীর পঞ্চপুত্রকে ত্ৰিগর্ত্তাদিগের সহিত এবং অভিমন্যুকে বৃষসেন ও অন্যান্য মহীপালগণের সহিত যুদ্ধ করিতে আদেশ করিলেন। তিনি অভিমন্যুকে অর্জ্জুন অপেক্ষাও সমধিক বলশালী জ্ঞান করিতেন। এইরূপে সেনাপতিগণের অধিপতি ধৃষ্টদ্যুম্ন যোদ্ধাবৰ্গকে সমবেত ও পৃথক পৃথক বিভক্ত করিয়া যুদ্ধ করিতে আদেশ করিলেন এবং দ্রোণাচাৰ্য্যকে স্বীয় প্রতিদ্বন্দ্বী স্থির করিয়া রাখিলেন। তিনি সংগ্রামের নিমিত্ত কৃতসঙ্কল্প [সঙ্কল্পবদ্ধ—কর্ত্তব্যে স্থির] হইয়া বিধি অনুসারে ব্যূহরচনা করিয়া পাণ্ডবগণের সেনাযোজনা করিলেন এবং তাঁহাদিগের জয়লাভের নিমিত্ত সাতিশয় যত্নসহকারে সমরাঙ্গনে অবস্থিতি করিতে লাগিলেন।”
উলূকদূতগমনপর্ব্বাধ্যায় সমাপ্ত