যোড়হাতে ভরত বলেন সবিনয়।
কেমনে রাখিব রাজ্য, মম সাধ্য নয়।।
তোমার পাদুকা দেহ, কর গিয়া রাজা।
তবে সে পারিব রাম পালিবারে প্রজা।।
তোমার পাদুকা যদি থাকে রাম ঘরে।
ত্রিভুবনে আমার কি করে কার ডরে।।
শ্রীরাম বলেন, হে ভরত প্রাণাধিক।
পাদুকা লইয়া যাও, কি কব অধিক।।
নন্দীগ্রামে পাট করি কর রাজকার্য্য।
সাবধান হইয়া পালিহ পিতৃরাজ্য।।
শ্রীরামের পাদুকা ভরত শিরে ধরে।
ভাবে পুলকিত অঙ্গ, প্রফুল্ল অন্তরে।।
পাদুকার অভিষেক করিয়া তথায়।
চলিলেন ভরত শ্রীরামেরা আজ্ঞায়।।
যাত্রাকালে উঠে মহা ক্রন্দনের রোল।
কোন জন শুনিতে বা পায় কারো বোল।।
কান্দেন কৌশল্যা রাণী রামে করি কোলে।
বসন ভিজিল তাঁর নয়নের জলে।।
সুমিত্রা কান্দেন কোলে করিয়া লক্ষ্মণে।
সকলে ক্রন্দন করে সীতার কারণে।।
ভরতেরে বিদায় করিয়া রঘুবীর।
চিত্রকূটে কিছুদিন রহিলেন স্থির।।
সৈন্যগণ সহিত ভরত অতঃপরে।
তিন দিনে আইলেন অযোধ্যানগরে।।
বিশ্বকর্ম্মে পাঠাইয়া দেন ভগবান।
নন্দীগ্রামে অট্টালিকা করিতে নির্ম্মাণ।।
রত্ন-সিংহাসনে শ্রীভরত পট্ট পাতি।
তদুপরি পাদুকা থুইয়া ধরে ছাতি।।
তার নীচে শ্রীভরত কৃষ্ণসার চর্ম্মে।
পাত্র মিত্র সহিত থাকেন রাজকর্ম্মে।।
কৃত্তিবাস কবির সঙ্গীত সুধাভাণ্ড।
কিবা মনোহর গীত এ অযোধ্যাকাণ্ড।।