হাসিতে হাসিতে হনু হার লয়ে হাতে।
ছিন্ন ভিন্ন করে হার চিবাইয়া দাঁতে।।
দেখিয়া হনুর কর্ম্ম হাসেন লক্ষ্মণ।
কুপিত রহস্য-ভাবে বলেন তখন।।
লক্ষ্মণ বলেন প্রভু করি নিবেদন।
মারুতির গলে হার দিলে কি কারণ।।
সহজে বানর গণ্য পশুর মিশালে।
রত্নহার দিলে কেন বানরের গলে।।
শ্রীরাম বলেন, শুন প্রাণের লক্ষ্মণ।
কি হেতু ছিঁড়িল হার পবন-নন্দন।।
ইহার বৃত্তান্ত হনুমান ভাল জানে।
জিজ্ঞাসহ হনুমানে সভা বিদ্যমানে।।
হনুমান বলে, শুন ঠাকুর লক্ষ্মণ।
বহুমূল্য বলি হার করিনু গ্রহণ।।
দেখিলাম বিচার করিয়া তার পরে।
রামনাম নাহি এই হারের ভিতরে।।
রামনাম হীন যাতে এমন যে ধন।
পরিত্যাগ করা ভাল নাহি প্রয়োজন।।
লক্ষ্মণ বলেন শুন পবন-কুমার।
রাম-নাম চিহ্ন নাহি দেহেতে তোমার।।
তবে কেন মিথ্যা দেহ করেছ ধারণ।
কলেবর ত্যাগ কর পবন-নন্দন।।
এতেক শুনিয়া তবে পবন-কুমার।
নখে চিরি কলেবর করিল বিদার।।
সভামধ্যে দেখাইল বিদারিয়া বক্ষ।
অস্থিময় রাম নাম লেখা লক্ষ লক্ষ।।
দেখিয়া সভার লোক হৈল চমকিত।
অধোমুখে লক্ষ্মণ রহিলা সলজ্জিত।।
লক্ষ্মণ বলেন শুন বীর হনুমান।
শ্রীরামের ভক্ত নাহি তোমার সমান।।
রাম জানে তোমারে শ্রীরামে জান তুমি।
তোমার মহিমা সীমা কি জানিব আমি।।
হনুমান বলে আমি বনের বানর।
রামের দাসানুদাস তোমার নফর।।
হনুমানের কথা শুনি শ্রীরামের হাস।
লঙ্কাকাণ্ডে গাহিল পণ্ডিত কৃত্তিবাস।।