৮৯তম অধ্যায়
পশ্চিমদিগবর্ত্তী নৰ্ম্মদাদি তীৰ্থ
ধৌম্য কহিলেন, “পশ্চিমদিকে অবন্তিদেশে যে-সকল পবিত্র আয়তন আছে, তাহা আপনার নিকট কীর্ত্তন করিতেছি, শ্রবণ করুন। প্রিয়ঙ্গু, আম্রবন ও বানীর [বেতস-বেতের ফল]-ফলশালিনী পুণ্যসলিলা স্রোতস্বতী নর্ম্মদা তথায় প্রবাহিত হইতেছে; ত্ৰিভুবনের সমুদয় তীর্থ, সমুদয় পুণ্যােয়তন, সমুদয় নদী, সমুদয় বন, সমুদয় পর্ব্বত, ব্ৰহ্মা আদি সমুদয় দেবতা, সিদ্ধার্ষি ও চারণগণ ঐ নির্ম্মদার পবিত্ৰ স্রোতে স্নান করিতে সর্ব্বদা আগমন করিয়া থাকেন। শ্রবণ করিয়াছি যে, ঐ প্রদেশে বিশ্রবা মুনির পবিত্র আশ্রম ও ধনপতি কুবেরের জন্মস্থান। তথায় এক পবিত্র বৈদূৰ্য্যশিখরনামে গিরিরাজ আছে, তত্ৰত্য হরিদ্বর্ণ পল্লবশোভিত পাদপসকল সর্ব্বকালেই ফলকুসুমে সুষমান্বিত হইয়া থাকে। সেই শৈলরাজের শিখরপ্রদেশে প্রফুল্ল-কমলশোভিত দেবগন্ধর্ব্বসেবিত এক সরোবর দৃষ্টিগোচর হয়। ঐ স্বর্গোপম পর্ব্বত বহুবিধ আশ্চৰ্য্য বিষয়ে পরিপূর্ণ তথায় বিশ্বামিত্ৰ নদী-নামে বিখ্যাত এক পবিত্ৰ তরঙ্গিণী তীর্থরূপে পরিগণিত হইয়া আছে। তাহার তীরে নহুষাত্মজ যযাতি স্বৰ্গলোক হইতে সাধুগণমধ্যে নিপতিত হইয়া পুনরায় সনাতনধর্ম্ম ও লোক-লাভ করিয়াছিলেন। তথায় এক পবিত্র হ্রদ, মৈনাক পর্ব্বত ও অসিতনামে গিরিবর বিদ্যমান আছে। ঐ স্থানেই কক্ষসেন ও চ্যবন মুনির পবিত্ৰ আশ্রমদ্বয় অবলোকিত হইয়া থাকে। তথায় স্বল্পমাত্ৰ তপস্যা করিলেই সিদ্ধিলাভ হয়।
“মহারাজ! মৃগপক্ষিসেবিত জম্বুমার্গ শান্তিরসপূর্ণ পরমজ্ঞানশালী ঋষিগণের আশ্রমপদ। তৎপরে তাপস,সমাকীর্ণ পুণ্যতম কেতু,মালা, গঙ্গাদ্বার, দ্বিজগণসেবিত সৈন্ধবারণ্য, ব্ৰহ্মসরোবর ও পবিত্ৰ পুষ্করতীৰ্থ আছে। এই পুষ্করতীৰ্থ বৈখানস ঋষিগণের প্রিয়তম আশ্রম। লোকে ঐ স্থানে বাস করিবে বলিয়া প্রজাপতি ব্ৰহ্মা তাহার অনেক গুণকীর্ত্তন করিয়াছেন। যাহারা মনে মনেও পুষ্কর-তীর্থের কামনা করে, তাহারা বিগতপাপ হইয়া সুরলোকে আনন্দ ভোগ করিতে থাকে।”