ইন্দ্রের শুনিয়া বাণী, কন কমণ্ডলু-পাণি,
উপায় কেবল দেবীপূজা।
তুমি পূজি যে চরণ, জিনিলে অসুরগণ,
বোধিয়া শরতে দশভুজা।।
পূজা রাম কৈলে তাঁর, হবে রাবণ সংহার,
শুন সার সহস্রলোচন।
শুনি কহে সুরপতি, যাহ তুমি শীঘ্রগতি,
জানাও শ্রীরামে বিবরণ।।
প্রেমে পুলকিত চিত, পদ্মযোনি আনন্দিত,
শ্রীরাম নিকটে উপনীত।
বিনয় করিয়া কয়, শুন প্রভু দয়াময়,
রাবণ বধের যে বিহিত।।
ব্রহ্মার বচন শুনি, কন রাম গুণমণি,
কহ বিধি কি উপায় করি।
মিথ্যা শ্রম করিলাম, অনুপায়ে ঠেকিলাম,
রক্ষিল রাবণে মহেশ্বরী।।
বিধাতা কহেন প্রভু, এক কর্ম্ম কর বিভু,
তবে হবে রাবণ সংহার।
অকালে বোধন করি, পূজ দেবী মহেশ্বরী,
তরিবে হে এ দুঃখ-পাথার।।
শ্রীরাম কহেন তবে, কিরূপে পূজিতে হবে,
অনুক্রম কহ শুনি তার।
শ্রীরাম আপনি কয়, বসন্তে শুদ্ধ সময়,
শরৎ অকাল এ পূজার।।
বিধি আছে নিরূপণ, নিদ্রা ভাঙ্গিতে বোধন,
কৃষ্ণা নবমীর দিনে তাঁর।
সে দিন হয়েছে গত, প্রতিপদে আছে মত,
কল্পারম্ভে সুরথ রাজার।।
সে দিন নাহিক আর, পূজা হবে কি প্রকার,
শুক্লা ষষ্ঠী মিলিবে প্রভাতে।
কন্যারাশি মাস বটে, কিন্তু পূজা নাহি ঘটে,
অত্র যোগ সব হৈল যাতে।।
বিধাতা কহেন সার, শুন বিধি দিই তার,
কর ষ্ষ্ঠী-কল্পেতে বোধন।
ব্যাঘাত না হবে তায়, বিধি খণ্ডি পুনরায়,
কল্পখণ্ডে সুরথ রাজন।।
এই উপদেশ কন, শুনি রাম সুখী হন,
বিধাতা গেলেন নিজ ধাম।
প্রভাত হইল নিশা, প্রকাশ পাইল দিশা,
স্নান দান করিলা শ্রীরাম।।
বনপুষ্প ফলমূলে, গিয়া সাগরের কূলে,
কল্প কৈলা বিধির বিচার।
পূজি দুর্গা রঘুপতি, করিলেন স্তুতি নতি,
বিরচিল চণ্ডীপূজা সার।।