উশীনর নৃপমণি, শ্যেনের বচন শুনি,
ভাসিলেন আহ্লাদ সাগরে।
আশ্রিতে রক্ষিনু জানি, আপনারে ধন্য মানি,
তুলা যন্ত্র আনিয়া সত্বরে।।
নিজ হস্তে তুলা ধরি, নিজ মাংস খণ্ড করি,
কপোতের তুল্য করিবারে।
নিজ মাংস যত দেয়, তবু নাহি তুল্য হয়,
হুতাশন কপোতের ভারে।।
মাংস দেয় রাশি রাশি, তবু ভার হয় বেশী,
কি করিব ভাবেন রাজন।
মাংস কাটি দিনু যত, না হয় কপোত মত,
অসম্ভব না হেরি এমন।।
ক্ষণকাল চিন্তা করি, ভক্তিভাবে স্মরে হরি,
তুলে বসে নিজে উশীনর।
হেরিয়া নৃপের মতি, শ্যেনরূপী সুরপতি,
কহিলেন শুন নৃপবর।।
সুরপতি মম নাম, রাজ্য করি সুরধাম,
কপোত বেশেতে হুতাশন।
ধার্ম্মিকতা দেখিবারে, মোরা দোঁহে ছল করে,
আসিয়াছি তোমার সদন।।
হেরি তোমা ধর্ম্মনিষ্ঠ, হইলাম বড় তুষ্ট,
বদ্ধ হৈনু তব ধর্ম্মফলে।
তোমার মহিমা ভবে, যাবত ধরণী রবে,
ধন্য ধন্য গাহিবে সকলে।।
নরজ্বালা হৈল নাশ, সশরীরে স্বর্গবাস,
হৈল তব শুন নরপতি।
ত্যজিয়া সংসার মায়া, ধরিয়া দেবের কায়া,
চল চল মোদের সংহতি।।
শূন্য হৈতে রথ আসে, চলিল অমর বাসে,
দয়ার প্রভাবে উশীনর।
অপ্সরা যোগিনী কত, দেবানী কিন্নরী যত,
পুষ্পবৃষ্টি করেন অমর।।