৬৬তম অধ্যায়
স্ব-পর-বিলাবিলনির্ণয়ে ধৃতরাষ্ট্র জিজ্ঞাসা
বৈশম্পায়ন কহিলেন, মহারাজ দুৰ্য্যোধন সঞ্জয়ের বাক্য অভিনন্দন না করিলে এবং অন্যান্য লোকও মৌনী হইয়া রহিলে তত্ৰস্ত সমস্ত ভূপতিগণ সভা হইতে গাত্ৰোত্থান করিলেন। তখন পুত্রপরবশ রাজা ধৃতরাষ্ট্র পাণ্ডবগণের জয়শঙ্কা করিয়া সেই নির্জ্জন স্থানে শত্ৰুগণ, অন্যান্য লোক ও আপনাদের চেষ্টাসকল সঞ্জয়কে জিজ্ঞাসা করিতে লাগিলেন। “হে সঞ্জয়! আমাদিগের সেনামধ্যে কে শ্রেষ্ঠ ও কে অপকৃষ্ট বল এবং তুমি পাণ্ডবগণের বিষয়ও বিশিষ্টরূপ অবগত আছ, অতএব তাহাদিগের মধ্যেই বা কোন ব্যক্তি জ্যায়ান [*শ্রেষ্ঠ—অপকৃষ্ট] ও কোন ব্যক্তি কনীয়ান [*] তাহাও কীর্ত্তন কর। তুমি উভয় পক্ষেরই সর্ব্বজ্ঞ, সর্ব্বদশী, ধর্ম্মাৰ্থকুশল, নিশ্চয়জ্ঞ; এই নিমিত্ত তোমাকে জিজ্ঞাসা করিতেছি, তুমি বল, পাণ্ডব ও কৌরবগণ পরস্পর যুদ্ধে প্ৰবৃত্ত হইলে কাহারা বিনাশপ্রাপ্ত হইবে?” সঞ্জয় কহিলেন, “মহারাজ! আমি কদাপি নির্জ্জন স্থানে আপনাকে কহিব না; কেন না, তাহাতে আপনার মনে অসূয়ার উদয় হইতে পারে; অতএব মহাব্ৰত ব্যাসদেব ও দেবী গান্ধারীকে আনয়ন করুন। তাঁহারা উভয়েই ধৰ্মজ্ঞ, নিপুণ ও নিশ্চয়জ্ঞ; তাঁহারা আপনার অসূয়া খণ্ডন করিতে পরিবেন। আমি তাঁহাদের সন্নিধানে আপনাকে ধনঞ্জয় ও বাসুদেবের সমস্ত মত নিবেদন করিব।”
বিদুর এই কথা শ্রবণ করিয়া অনতিবিলম্বে গান্ধারী ও ব্যাসদেবকে আনয়ন করিলেন। ব্যাসদেব গান্ধারীর সহিত সভাপ্রবেশপূর্ব্বক ধৃতরাষ্ট্রের সন্নিহিত এবং তাঁহার ও সঞ্জয়ের মত অবগত হইয়া কহিলেন, “হে সঞ্জয়! তুমি ধনঞ্জয় ও বাসুদেবের সমস্ত বিষয় অবগত আছ; অতএব ধৃতরাষ্ট্র তদ্বিষয়ে যাহা কিছু জিজ্ঞাসা করেন, তাহা কীর্ত্তন কর।”