লোমশ বলেন, এই মহাতীর্থ স্থান।
পরশনে হয় তার বৈকুণ্ঠে প্রস্থান।।
পূর্ণ গঙ্গা এই স্থানে বধূসর নাম।
যেই স্থানে হতবীর্য্য হইলেন রাম।।
যুধিষ্ঠির কহিলেন, কহ তপোধন।
হতবীর্য্য রাম হইলেন কি কারণ।।
লোমশ বলেন, পূর্ব্বে রাম দাশরথি।
বিষ্ণু অংশে চারি ভাই রঘুকুলপতি।।
লক্ষ্মী অংশে জন্মিলেন জনক নন্দিনী।
তাঁহার বিবাহে পণ কৈল নৃপমণি।।
ধূর্জ্জটীর ধনুর্ভঙ্গ যে জন করিবে।
তাহারে আমার কন্যা জানকী বরিবে।।
দেশে দেশে বার্ত্তা দিল জনক রাজন।
রাজগণ আসে সব সাগর সমান।।
রাক্ষসে যজ্ঞনাশে তেঁই বিশ্বামিত্র ঋষি।
সে হেতু নিয়ে যান রামে অযোধ্যা আসি।।
যজ্ঞ রক্ষা কৈল রাম রাক্ষসে মারিয়া।
সীতা লভিলেন রাম ধনুক ভাঙ্গিয়া।।
সীতা লয়ে যান রাম অযোধ্যা নগর।
পথেতে ভেটিল কুলান্তক ভৃগুবর।।
দুর্জ্জয় ধনুক বামে, দক্ষিণে কুঠার।
পৃষ্ঠে শর তূণ তাঁর, শিরে জটাভার।।
দুই চক্ষু রক্তবর্ণ, প্রকাণ্ড শরীর।
কর্কশ বচনে কহে চাহি রঘুবীর।।
জীর্ণ ধনু ভাঙ্গি তোর এত অহঙ্কার।
সীতারে লইয়া যাস্ অগ্রেতে আমার।।
না ডরিস্ ভৃগুরামে এত অহঙ্কার।
ক্ষণেক তিষ্ঠহ, বুঝি পরাক্রম তোর।।
দেহ মম ধনুতে গুণ, তবে বীর বলি।
এত বলি দুর্জ্জয় ধনুক দিল ফেলি।।
তবে শ্রীরামচন্দ্র ভৃগুর ধনু তুলি।
দিলেন ধনুকে গুন রাম মহাবলী।।
রাম বলিলেন, জমদগ্নির নন্দন।
ধনুকেতে গুণ দিনু, কি করি এখন।।
ইহা শুনি ভৃগুপতি দিল দিব্য শর।
শর সহ বিষ্ণুতেজ নিলা রগুবর।।
আকর্ণ পূরিয়া ধনু কহে দাশরথি।
কোথায় মারিব শর, কহ ভৃগুপতি।।
ব্রাহ্মণ বর্ণের গুরু, মম বধ্য নহ।
অব্যর্থ আমার লক্ষ্য কোথা মারি কহ।।
স্তুতি করি কহে তব ভৃগুর কুমার।
শর মারি স্বর্গপথ রোধহ আমার।।
একবাণে স্বর্গ রোধ করেন তাহার।
পরশুরামের চূর্ণ হৈল অহঙ্কার।।
মুনি বলে, কহিলাম রামের আখ্যান।
কাশীদাস বিরচিল, শুনে পুণ্যবান।।