দৈবের লিখন কভু না যায় খণ্ডন।
শ্রীরাম রাবণে দোঁহে বাজে মহারণ।।
শত বাণ যোড়ে রাবণ ধনুকের গুণে।
কাটিল বিংশতি বাণে রাজীবলোচনে।।
বাছিয়া রাবণ বরিষয়ে চোখ শর।
বিন্ধিয়া কোমল অঙ্গ করিল জর্জ্জর।।
বাণাঘাতে রঘুনাথ হৈল অচেতন।
রামে পাছু করি আগে রহিল লক্ষ্মণ।।
রাবণ উপরে বীর শ্রীঘ্র এড়ে বাণ।
দিব্য বাণ মারিলেন পূরিয়া সন্ধান।।
লক্ষ্মণ যে বাণ মারে বলে মহাবল।
সারথির মুণ্ড কাটি পাড়ে ভূমিতল।।
লক্ষ্মণের বাণেতে যে রথ হৈলগুঁড়া।
গদাঘাতে বিভীষণ মারে অষ্ট ঘোড়া।।
কোপে দশানন বিভীষণ পানে চায়।
তুলিয়া নিলেক শেল দেখে ভয় পায়।।
বংশনাশ করিলি পাপিষ্ঠ বিভীষণ।
মারিয়া পাড়িব আজি রাখে কোন্ জন।।
রথ না সম্বরে রাবণ গর্জ্জিয়া কোপেতে।
বিভীষণে মারিতে যে শেল লয় হাতে।।
শেলপাট এড়িলেক দিয়া হুহুঙ্কার।
স্বর্গ মর্ত্ত্য পাতালে লাগিল চমৎকার।।
শেলপাট দেখে চমকিত বিভীষণ।
ডাকি বলে প্রাণ রাখ ঠাকুর লক্ষ্মণ।।
শেলের উদ্দেশেতে লক্ষ্মণ এড়ে বাণ।
তিন বাণে শেল কাটি কৈল চারি খান।।
শেল কাটা গেল বানর দিল টিটকারী।
কুপিল রাবণ রাজা লঙ্কা-অধিকারী।।
কুড়ি চক্ষু ঘোরে বীর দেখি ভয়ঙ্কর।
আর শেল হাতে নিল যমের দোসর।।
বজ্রসম শেলপাট দেখে লাগে ভয়।
যারে মারে শেল, তার জীবন সংশয়।।
এনেছিল শেল রামে মারিবার মনে।
কোপ করি সেই শেল হানে বিভীষণে।।
বিভীষণ ফাঁফর হইল শেল দেখি।
সেই শেল কাটিলেন লক্ষ্মণ ধানুকি।।