৬৫তম অধ্যায়
নৃপতি শশবিন্দুর মরণবার্ত্তা
নারদ কহিলেন, হে সৃঞ্জয়! মহারাজ শশবিন্দুও কাল কবলে কবলিত হইয়াছেন। ঐ সত্যপরাক্রম শ্ৰীমন্ মহাত্মা বিবিধ যজ্ঞের অনুষ্ঠান করিয়াছিলেন। তাঁহার এক লক্ষ ভাৰ্য্যা ছিল। তাহাদের প্রত্যেকের গর্কে ভূপতির এক এক সহস্র তনয় উৎপন্ন হয়। রাজ কুমারেরা সকলেই মহাবল পরাক্রান্ত, বেদপারগ, হিরণ্য কবচধারী ও মহাধনুর্দ্ধর ছিলেন। তাঁহারা সকলেই বহুসংখ্যক অশ্বমেধ ও নিযুত সংখ্যক অন্যান্য প্রধান যজ্ঞের অনুষ্ঠান করিয়াছিলেন। মহারাজ শশবিন্দু স্বয়ং অশ্বমেধের অনুষ্ঠান করিয়া ঐ সমুদায় তনয় ব্রাহ্মণদিগকে দক্ষিণা স্বরূপ প্রদান করেন। ঐ সকল প্রত্যেক রাজপুত্রের পশ্চাৎ অসংখ্য রথ, গজ ও সুবর্ণালঙ্কৃত রাজকন্যা গমন করিয়াছিল। প্রত্যেক কন্যার সহিত শত গজ, প্রত্যেক গজের সহিত শত রথ, প্রত্যেক রথের সহিত শত অশ্ব, প্রত্যেক অশ্বের সহিত সহস্র গাভী ও প্রত্যেক গাভীর সহিত পঞ্চাশৎ ছাগ গমন করে।
হে সৃঞ্জয়! মহারাজ শশবিন্দু এইরূপে মহাযজ্ঞ অশ্বমেধে ব্রাহ্মণগণকে অপৰ্যাপ্ত ধন সম্প্রদান করিয়াছিলেন। লোকে অশ্বমেধে যতগুলি বৃক্ষের যুপ প্রস্তুত করিয়া থাকে, মহারাজ শশবিন্দুর যজ্ঞে ততগুলি বৃক্ষের যুপ এবং আর ততগুলি সুবর্ণময় যুপ নির্মিত হইয়াছিল। ঐ যজ্ঞে এক ক্রোশ উচ্চ অসংখ্য অন্নপর্ব্বত ও পানীয় হ্রদ প্রস্তুত হয়। অশ্বমেধ সমাপ্ত হইলে মহারাজ শশবিন্দুর এয়োদশ রাজ্য অবশিষ্ট ছিল। ঐ মহাত্মা বহু দিন রাজ্য ভোগ ও প্রজা পালন করিয়া পরিশেষে অমর লোকে গমন করেন। হে সৃঞ্জয়! তোমা অপেক্ষা সমধিক তপ, সত্য, দয়া ও দানশালী এবং তোমার পুত্র অপেক্ষা অধিক পুণ্যবান মহাত্মা শশবিন্দুকেও কাল কবলে নিপতিত হইতে হইয়াছে; অতএব তুমি অযাজিক অধ্যয়নাদি রহিত স্বীয় তনয়ের নিমিত্ত আর বৃথা অনুতাপ করিও না।