৬২তম অধ্যায়
যুধিষ্ঠিরের ক্ষত্রিয়ধৰ্ম্ম জিজ্ঞাসা
যুধিষ্ঠির কহিলেন, “পিতামহ! মাদৃশ জনগণের সুখাবহ, হিংসাদিবর্জ্জিত, সাধুসম্মত মঙ্গলজনক ধৰ্ম্মসকল কীৰ্ত্তন করুন।”
ভীষ্ম কহিলেন, “রাজন্! ব্রহ্মচর্য্যাদি আশ্রমচতুষ্টয় ব্রাহ্মণের নিমিত্তই বিহিত হইয়াছে। ক্ষত্রিয়াদিবর্ণও ব্রাহ্মণদিগের দৃষ্টান্তানুসারেই বানপ্রস্থাদি আশ্রম অবলম্বন করিয়া থাকে। পূৰ্ব্বে আমি ক্ষত্রিয়গণের যুদ্ধ প্রভৃতি যেসকল স্বর্গলাভজনক উৎকৃষ্ট কৰ্ম্ম কীর্ত্তন করিয়াছি, সমুদয়ই ক্ষত্রিয়ের নিমিত্ত বিহিত হইয়াছে। ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য বা শূদ্রের কাৰ্য্যের অনুষ্ঠান করিলে তাঁহাকে ইহলোকে নিরয়গামী হইতে হয়। ব্রাহ্মণ অসৎকার্য্যপরায়ণ হইলে লোকে তাঁহাকে দাস, কুক্কুর, বৃক ও পশুর ন্যায় অবজ্ঞা করে। যে ব্রাহ্মণ চারি-আশ্রমেই প্রাণায়ামাদি ষট্কার্য্যে [প্রাণায়াম, প্রত্যাহার, ধ্যান, ধারণা, তর্ক, সমাধি] নিরত, ধৰ্ম্মপরায়ণ, জিতেন্দ্রিয়, বিশুদ্ধাত্মা, তপানুষ্ঠাননিরত ও অতি বদান্য হয়েন, তিনি অক্ষয়লোকলাভে সমর্থ হইয়া থাকেন। যে ব্যক্তি যে প্রদেশে যেরূপ সংসর্গে যাদৃশ কৰ্ম্মের অনুষ্ঠান করে, সে সেইরূপ প্রদেশ, সংসর্গ ও কর্ম্মের অনুরূপ ফল লাভ করিয়া থাকে। এই নিমিত্ত বৃদ্ধি, কৃষি, বাণিজ্য ও মৃগয়া প্রভৃতি কাৰ্য্য বেদাভ্যাসের তুল্য বলিয়া পরিগণিত হয়। মানবগণ কালের বশীভূত হইয়াই উত্তম, মধ্যম ও অধম কার্য্যে নিরত হয়। পুণ্য লোকের শ্রেয়স্কর, কিন্তু উহা অবিনশ্বর নহে। যাহা হউক, মনুষ্য স্বকর্ম্মে নিরত থাকিলেই উভয় লোকে সুখলাভ করিতে পারে।”