বামে সিন্ধুতনয়া নিকটে সুদর্শন।
জলদ অঙ্গেতে শোভে তড়িত বসন।।
বদন নয়ন শোভে জগমন ফাঁদ।
নির্ম্মল গগনে যেন শোভে পূর্ণচাঁদ।।
যে মুখ দেখিলে মুক্তি আঁখির নিমিষে।
সেইক্ষণে মুক্ত হয় জন্ম কর্ম্মপাশে।।
জন্মে জন্মে তপব্রতে ক্লেশ করে কায়।
ক্ষিতি প্রদক্ষিণ করে, সব্বতীর্থে যায়।।
যাহাতে না পায় যজ্ঞ দানে সেবি দেবে।
নিমিষেতে শ্রীমুখ দেখিয়া তাহা লভে।।
ব্রহ্মা শিব শচীপতি আদি দেবগণ।
নিত্য নিত্য আসে মুখ দর্শন কারণ।।
তাহা যে দেখয়ে লোক পশ্চাতে থাকিয়া।
বেত্রের প্রহারে লোক জর্জ্জর হইয়া।।
যার অংশে অবতার হয পৃথিবীতে।
যুগে যুগে দুষ্ট নাশে, শিষ্টেরে পালিতে।।
অজ ভগ অগোচর যাঁহার মহিমা।
দেবগণ পুরাণে না পায় যাঁর সীমা।।
ব্রহ্মাণ্ড ডুবায় ব্রহ্ম প্রলয়ের কালে।
সপ্ত কল্পজীবী মুনি ভাসি সিন্ধুজলে।।
বিশ্রাম পাইল মুনি প্রভুর নিকটে।
সেই হতে রহিল আপনি বৃক্ষবটে।।
কে বর্ণিতে পারে মার্কণ্ডেয় হ্রদ গুণ।
যার জলে স্নানে ভূমে জন্ম নহে পুনঃ।।
দক্ষিণেতে শ্বেতগঙ্গা মাধব সমীপে।
যাহে স্নানে ভূমি জন্ম নহে পুনঃ।।
দক্ষিণেতে শ্বেতগঙ্গা মাধব সমীপে।
যাহে স্নানে স্বর্গে নর বৈসে দেবরূপে।।
রোহিণীকুণ্ডের গুণ কি বলিতে পারি।
তৃষ্ণায় পীড়িত হয়ে পীয়ে যার বারি।।
গরুড়ে আরূঢ় কাক বৈকুন্ঠেতে গেল।
সেই হৈতে জন্মক্ষেত্রে পত্র ত্যাগ কৈল।।
কোটি কোটি তীর্থ লয়ে যথা মহানদী।
নানাশব্দ বাদ্যে প্রভু সেবে নিরবধি।।
যার বায়ে সকল পাপীর পাপ খণ্ডে।
যার নাম শুনিলে এড়ায় যমদণ্ডে।।
সর্ব্বপাপে মুক্ত হয়, যার দরশনে।
সদাকাল বৈসে স্বর্গে সহ দেবগণে।।
সমুদ্রে করিয়া স্নান যদি পূজা দেখে।
চতুর্ভূজ হয়ে রহে ইন্দ্রের সম্মুখে।।
ইন্দ্রদ্যুন্ন সরোবরে যদি করে স্নান।
পুনর্জ্জন্ম নহে তার দেবতা সমান।।
অশ্বমেধ দান যত করিল ভূপতি।
কোটি কোটি ধেনুখুরে ক্ষুণ্ণা বসুমতী।।
গোমূত্র ফেণায় ইন্দ্রদ্যুন্ন সরোজন্ম।
যাহে স্নাহে খণ্ডে কোটি জন্মের অধর্ম্ম।।
এই পঞ্চ তীর্থ নীলশৈল মধ্যে বৈসে।
পাপলেশ নাহি থাকে তাহার পরশে।।
ভাগ্যবন্ত লোক যেই সদা করে স্নান।
কাশীরাম দাস তার প্রণমে চরণ।।