৫৭তম অধ্যায়
অঙ্গরাজ পৌরবের পরলোকবার্তা বর্ণন
নারদ কহিলেন, হে সৃঞ্জয়! মহাবীর রাজা পৌরবও কালগ্রাসে নিপতিত হইয়াছেন। তিনি দশলক্ষ শ্বেতবর্ণ অশ্বদান করিয়াছিলেন। তাঁহার অশ্বমেধ যজ্ঞে নানাদেশ সমাগত, অধ্যয়নরীতিজ্ঞ ও ব্ৰহ্মানুষ্ঠান কুশল অসংখ্য পণ্ডিতগণের সমাগম হয়। ঐ সকল বেদস্নাত, বিদ্যাস্নাত ও ব্রতস্নাত, বদান্য, প্রিয় দর্শন পণ্ডিতগণ পৌরবের নিকট উৎকৃষ্ট ভিক্ষা, আচ্ছাদন, গৃহ, শয্যা, আসন ও বাহন প্রাপ্ত হইয়া পরম পরিতুষ্ট হইয়াছিলেন। নিয়ত উদ্যোগবিশিষ্ট, ক্রীড়ানিরত, নট, নর্ত্তক ও গন্ধৰ্ব্ব এবং সুবর্ণচূড় পক্ষী ও বর্দ্ধমানক গৃহ সতত তাঁহাদের সন্তোষ সাধন করিত। মহারাজ পৌরব প্রতি যজ্ঞে মদস্রাবী সুবর্ণবর্ণ দশ সহস্র হস্তী, ধ্বজ পতাকা পরিশোভিত রথ, সহস্র সহস্র সুবর্ণালঙ্কৃত কন্যা, রথযুক্ত সুপ্র সিদ্ধ অশ্ব ও গজ এবং গৃহ, গোশত, কাঞ্চনমালালঙ্কৃত দেহ সহস্ৰ ধেনু ও ভৃত্য সকল দান করিতেন। পুরাণবেত্তা মহাত্মার এইরূপ কহিয়া থাকেন যে, রাজা পৌরব সেই সুবিস্তীর্ণ যজ্ঞে হেমশৃঙ্গ রৌপ্যখুর, কাংস্যদোহনপাত্র সমবেত সবৎসা ধেনু, দাস, দাসী, খর, উষ্ট্র, মেষ, ছাগ, বিবিধ রত্ন ও অন্নপর্ব্বত সকল দক্ষিণ প্রদান করিয়া ছিলেন। সেই যাজ্ঞিক অঙ্গরাজ পৌরব ক্রমে স্বধর্ম্মানুগত সর্ব্বকামপ্রদ যাগ যজ্ঞের অনুষ্ঠান করেন। হে সৃঞ্জয়! তোমাপেক্ষা সমধিক সত্য, তপ দান ও দয়াসম্পন্ন এবং তোমার পুত্র অপেক্ষা পুণ্যবান সেই পৌরব রাজও মৃত্যু মুখে নিপতিত হইয়া ছিলেন; অতএব এক্ষণে তুমি সেই অযাজ্ঞিক ও অধ্যয়নাদি শূন্য পুত্রের নিমিত্ত অনুতাপ করিও না।