নিম্নোক্ত কাব্যগ্রন্থগুলি সাজানো হয়নি

সৌন্দর্য বিচার

বসেছিলাম এক বাইরে দৃষ্টি
মেলে।
টকটকে তাজা এক গোলাপ
দুলতে দুলতে এসে আমাকে
প্রশ্ন করে-
‘বলো, আমি কি খুব
সুন্দর?’
আমি ফুটন্ত গোলাপের সুঘ্রাণ
নিয়ে বলি-
তোমর সৌন্দর্য তো
ভুবনখ্যাত।

এক চিলতে বারান্দায়
ঝুঁকে-থাকা গাছের পাতা
ঝিলমিলিয়ে শুধায়-
‘শোনো, তুমি কি সুন্দর
বলবে আমাকে?’
আমি তার সজীব সবুজাভার
উদ্দেশে বলি নির্দ্বিধায়,
তোমাকে আমি সুন্দর ব’লেই
জানি।
নিজের শরীরের অপরূপ রঙ
ছড়িয়ে,
সারা ঘরে সুর ঝরিয়ে প্রশ্ন
করে এক পাখি-
‘আমার সৌন্দর্যের কদর
করো তুমি?
আমি তার চোখে চোখ রেখে
স্বপ্নাচ্ছন্ন স্বরে বলি, আমি
তোমার
সৌন্দর্যের বয়ান আমার
কবিতায় ছন্দোবদ্ধ করেছি।

দূর আকাশের নক্ষত্র জ্বলজ্বল
করতে-করতে
আমাকে জিগ্যেস করে,
‘আমার রূপের
স্বীকৃতি কি দাও তুমি,
মানব?’
আমি ওর দূরত্বকে তাচ্ছিল্য
ক’রে
ওর দিকে নিভৃতে পাঠাই
আমার বাণী-
কে আছে এমন যে তোমার
রূপ অস্বীকার করবে?

অনন্তর ওরা স্বরের ঐকতান
সাজিয়ে প্রশ্ন করে-
‘কে সবচেয়ে বেশি সুন্দর?’
আমি নিমেষে অকুণ্ঠ জবাব
দিই- যে আমার কথা
ভেবে-ভেবে
সারা রাত কাটায় নির্ঘুম, যে
আমার বিচ্ছেদে
কান্না হয় প্রহরে প্রহরে,
মনোকষ্টে গভীর অসুখের
বন্দিনী,
সেই-ই তো আমার একান্ত
সুন্দরীতমা।