(শহীদ প্রহ্লাদচন্দ্র সাহাকে নিবেদিত)
জ্যোৎস্নাস্নাত রাতে আসমানে একটি সোনালি
টেবিল এবং চার পাঁচটি রুপালি
চেয়ার মেঘের পর মেঘ পেরিয়ে যাচ্ছিলো। সেই
অপরূপ চেয়ারে ক’জন
তরুণ ঘনিষ্ঠ ভঙ্গিমায় উপবিষ্ট, অতিশয়
মশগুল বাক্যালাপে। ওরা
জ্যোৎস্না-মদিরায় বুঁদ হয়ে কতিপয়
ফরাসি কবির কবিতার পঙ্ক্তিমালা আওড়ায়।
আজকের কথা নয়। ক্যালেন্ডার থেকে ঢের ঢের
তারিখ-চিহ্নিত পাতা খসে গেছে কত যে বছর আর সেই
আসমানে সোনালি টেবিল-ঘেঁষে-বসা
তরুণেরা যৌবনের আভা-হারানো প্রবীণ আজ-
চৌদিকে ছিটকে-পড়া নক্ষত্রের মতো! ভাসমান টেবিলের,
চেয়ারের ঈষদুষ্ণ স্মৃতি কোনোদিন
চকিতে পড়ে কি মনে যৌবন-হারানো
সেই সব উন্মাতাল আড্ডাপ্রেমীদের? এখন তো
চাঁদ ঘুম-ছড়ানো জ্যোৎস্নার আভা মাখে
বয়সের ধুলোময় কর্কশ জমিনে, তুষারের কণা ওড়ে!
সোনালি টেবিল আর রুপালি চেয়ার এতকাল
পরেও আমার কাছে এসে কী মধুর
কণ্ঠস্বরে কত কথা বলে আর শোনায় কবিতা
নানা ছন্দে করে অনুরোধ
খাতার পাতায় যেন নতুন কবিতা লিখি এই
নিদ্রাহীন মধ্যরাতে বলে, ‘আমরা তো
বিউটি বোর্ডিং-এর স্বপ্নময় প্রহরের মায়া
নিয়ে এই তোমার নিবাসে এসে গেছি, কবি, জাগাতে তোমাকে।
৩০.৬.২০০৩