কাদাখোঁচা পাখি এক আমাকে খোঁচায় বারবার
আক্রোশ মেটাতে যেন। এমন বেয়াড়া নিপীড়নে
বস্তুত সুস্থির থাকা অসম্ভর; অথচ মেঘের
অন্তরাল থেকে-আসা প্রগাঢ় আশ্বাসবাণী প্রাণে সহিষ্ণুতা
সর্বদা টিকিয়ে রাখে। কাঁটাময় পথে হেঁটে হেঁটে
পা দুটো রক্তাক্ত হলো সেই কবে; তবুও জোটেনি
আজও কোনও প্রকৃত নিবাস
কোথাও, যেখানে অস্তিত্বের বিকল্প প্রোজ্জ্বল অস্তিত্বকে পাবো।
কম তো হলো না পথ হাঁটা, তবু অন্তহীন পথ
রয়ে যায়, চোখ দুটি নিভে আসে কী এক ভীষণ
ধোঁয়াশায়, নানাবিধ ভৌতিক আওয়াজ, মতিভ্রম মাথা তোলে
চারপাশে, মতিচ্ছন্ন আমি ছুটি দিগ্ধিদিক। হঠাৎ আমাকে, মনে হয়,
নরখাদকের দাঁত গেঁথে ফেলে আর আমি
ভয়ার্ত চেঁচিয়ে উঠি, কিন্তু কণ্ঠস্বর স্তব্ধ অতিশয়। তবু
সেই ক্রূর দংশনের বন্দিত্ব ঘুচিয়ে ঝটকায় ছুটে যাই
বিরানায়। অকস্মাৎ মনে হয়, এই বিভীষিকা দুঃস্বপ্নের ছায়া শুধু।
কোথাও নিবাস নেই, অথচ আমার সৃজনের জন্যে এই
মুহূর্তে একটি ঘর চাই নিরিবিলি। হন্যে হয়ে
খুঁজে মরি চতুর্দিকে, নেই কিছু নেই
কোনও দিকে, শুধু বালিয়াড়ি পড়ে চোখে, দিগন্তের
ধুধু রেখা দেখা যায়, দাঁড়িয়ে রয়েছি বড় একা-
এমন সফেদ শূন্যতায় করতে হবে নিত্য সৃজনের ধ্যান।
৯.১২.২০০০