প্রত্যহ তোমার কণ্ঠে বাজে সুপ্রভাত
আর শুভরাত্রি।
যখন নিবিড় বলো তুমি সুপ্রভাত,
আমার চৌদিকে এক ঝাঁক পাখি জুড়ে দেয় নাচ,
বয়ে যায় সুরের রূপালি ঝর্না, ফুল ফোটে। যখন তোমার
কণ্ঠে সুপ্রভাত শুনি, আমার হৃদয়
উন্মীলিত পদ্ম হয় শূন্যতায়; দেখি, স্নানার্থিণী বনদেবী
ভোরের আবীর মেখে সমস্ত শরীরে
আবরণ ছেড়ে ঘন ঝোপে নেমেছেন জলে, ভবিষ্যৎ হাসে
নির্জন রাস্তার মোড়ে একাকী দাঁড়িয়ে
এবং দিঘির ঘাটে অষ্টাদশী ভাসায় কলস
ঢেউ তুলে, আকাশে পায়রাগুলো শান্তির শিবির গড়ে তোলে।
যখন তোমার কণ্ঠে বাজে শুভরাত্রি, মনে হয়-
হঠাৎ গুণীর তানে ছায়া নেমে আসে, বেদনার
জন্ম হয়, যেন তুমি চলে যাচ্ছ দূরে,
আমার ব্যাকুল হাত তোমার সোনালি হাত থেকে,
ওষ্ঠ ঠোঁট থেকে দ্রুত সরে যাচ্ছে; তুমি
শুভরাত্রি বললেই আমার কবিতা খাতা থেকে অবিরল
ঝরে অশ্রুজন নিশীথের করতলে, দুব্বো ঘাসে। চোখে পড়ে,
শূন্য নৌকো এক কম্পমান ঢেউয়ে ঢেউয়ে।
প্রত্যহ তোমার কণ্ঠে বাজে সুপ্রভাত, শুভরাত্রি আর এই
শব্দ যুগলের মাঝে দুলছে দোয়েল হয়ে আমার জীবন।
৫.৬.৯৪