সেই যে কখন থেক লোকটা আমার মুখোমুখি
বসে আছে, তার চোখ দু’টি
নিষ্পলক চেয়ে আছে আমার দিকেই
মৎস্য শিকারির মতো। আমি কি পড়ব ধরা তার
বেঁকে-যাওয়া ছিপীই স্তব্ধ সন্ধ্যেবেলা? এখন সে
টেবিলে একটি রাঙা পোকাকে আঙুলে চটকাচ্ছে নিরিবিলি।
আমি এ টেবিল ছেড়ে খুব দ্রুত চলে যেতে চাই
অন্য কোনওখানে, কিন্তু যেন
যুদ্ধবন্দি আমি বাস্তবিক, এতটুকু সরবার
জো নেই কোথাও। অস্বস্তির কাঁটাগুলো মাংসে গেঁথে
যাচ্ছে ক্রমাগত আর লোকটার
হাতের আঙুলগুলো লোহার শিকের রূপ ধরে
আচানক; বমি পায়, যেন বড় তাড়াহুড়ো করে
কয়েকটি মেঘলা মদের পাত্র পর পর করেছি উজাড়।
স্বর্ণচাঁপা ওয়েস্ট্রেস মেন্যু হাতে আমাদের টেবিলের কাছে
এসে হেসে দাঁড়িয়ে,বাড়ায় আলগোছে স্নিগ্ধ মেন্যু-
কফি আর কেকের অর্ডার নিয়ে শাড়ির আঁচল
পেবল উড়িয়ে মিশে যায় কুয়াশায়। মৃদু হেসে
লোকটা টেবিলে মাত্রাবৃত্ত বাজায় এবং চোখে
আনে যুগপৎ
মিলন ও বিচ্ছেদের রঙ, ওর চোখে
চন্দ্র সূর্য অস্ত যায় এবং অজস্র নক্ষত্রের জন্ম হয়।
কে এই বেগানা লোক? এই প্রশ্ন আমাকে ব্যাকুল করে আর
আমার কম্পিত ঠোঁট শব্দময় হওয়ার আগেই
সে চেয়ার ছেড়ে দাঁড়ায় ত্বরিৎ, হেঁটে হেঁটে
আমার নিকট থেকে বহু দূরে চলে যায়। অকস্মাৎ বিদ্যুচ্চকের
মতো মনে হয়, আমি তার অস্তিত্বের
অস্থিচর্ম, মেদমজ্জা, চেতনায় মিশে দ্রুত করছি প্রস্থান।