বেশ কিছুদিন পর আজ খুব সকালে ঘুম ভাঙল;
রোদ্দুর তখনও ঘরে কলাপ মেলেনি, রেশমি
আরাম আমার শরীর জুড়ে। একটু পরেই রোদের ঝলক
চুমো খায় বারান্দা, ঘরের মেঝে, দেয়াল, লেখার
টেবিল, বিছানা আর বুক শেলফগুলোকে। কেন যেন
মনে হলো আমার বুকের ভেতর বিলের চকচকে জল,
একটা, নুয়ে পড়া বাঁশের কঞ্চিতে বসে-থাকা মাছরাঙা
উড়বে কি উড়বে না, ভাবছে। ঘুরে ঢুকে পড়ে একটি ভ্রমর
গুনগুনিয়ে খুশি বিতরণ করে; কী যে ভালো লাগল
আমার। গৌতম বুদ্ধের মতো সংসারত্যাগী হওয়ার
ভাবনা মনে উঁকিও দিল না কখনও, যদিও প্রায়শ নিজস্ব
ধরনে বসে যাই শব্দ ও ছন্দের ধ্যানে।
পর্যটক মেঘের দিকে তাকাই, গত রাতের অসমাপ্ত
কবিতার একটি কি দু’টি পঙক্তি ঝিকিয়ে ওঠে স্মৃতিতে,
এবং টুকরো কবিতাই সেই সন্ধ্যারাতের দৃশ্যটিতে টেনে আনে
যার মুখ্য চরিত্র ছিলাম গৌরী আর আমি। আনন্দের তরঙ্গ
থেকে তরঙ্গে আমার দোল-খাওয়া। আজ সকালে
টেবিলে-রাখা শুকিয়ে-যাওয়া ছোট্র গাঁদা ফুল, দেয়ালে
মিহি জালে বসে-থাকা সন্তানসম্ভবা মাকড়সা, মেঝের হাল্কা
ধুলো-সব কিছুই খুব ভালো লাগছে। এমন কি কি সবুজ ঘাসে নীরব,
বিচরণকারী গুবরে পোকা আর নর্দমায় লাফিয়ে ওঠা
কোলাব্যাঙটিকেও পরম সুন্দর আত্মীয় মনে হলো আমার।