শেখ লুৎফর রহমান যখন
শহীদ মিনারের সিঁড়ি বেয়ে উঠছিলেন,
তখন
সূর্য তার শেষ রশ্নি উপহার দিলো তাঁকে, সমগ্র
সত্তা তাঁর উদ্ভাসিত। সুগন্ধি বনচ্ছায়
থেকে ভেসে আসা বনদোয়েলের গান লুটিয়ে পড়ে
তাঁর পায়ে এবং একটি কোরাস,
তরুণের রক্তের মতো টগবগে আর
বিদ্রোহীর চোখের মতো জ্বলজ্বলে,
তাঁকে জানায় স্বাগত।
শেখ লুৎফর রহমান, দরাজ গলায় গায়ক, যখন
শহীদ মিনারের সিঁড়ি বেয়ে
উঠছিলেন আস্তে আস্তে; তখন আমরা যারা
বসেছিলাম দূরে, দেখলাম-
তিনি আসছেন,
তিনি আসছেন,
তিনি আসছেন,
সতেজ পদক্ষেপে
কোনো যুবরাজের মতো।
যেন খাটো নন তিনি, এক দীর্ঘকায় পুরুষ;
তার চুল শাদা নয় আর, বার্ধক্যের দবিজ ধুলো
ঝরে গেছে, কারো চওড়া কাঁধে কিংবা ক্রাচে
ভর দিয়ে হাঁটছেন না তিনি,
বিপ্লবীর গুলিবিদ্ধ পায়ের মতো।
নয় তাঁর পা,
তিনি উঠে আসছেন, এক তেজী তরুণ।
বার্ধক্যের ভরে নুয়ে ছিল যারা পরাস্ত সৈনিকের মতো
মাথা নত করে ছিল যারা, তাদের
উদ্দেশে তিনি গেয়ে উঠলেন গমগমে গলায়,
‘বল বীর চির উন্নত শির’।