শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া

যখন পাখিরা সব ম্লান গোধূলিতে আসমানে
রহস্য ছড়িয়ে ফিরছিলো নীড়ে আর
জনসভা থেকে লোকজন
যে যার আপন ঘরে ফেরার তাগিদে মশগুল,
তখন পথের ধারে একজন লোক
পড়ে ছিল একাকী নিঃসাড়। তাকে ঘিরে
একটি জটলা গড়ে ওঠে
নিমেষেই, কেউ কেউ খুব ঝুঁকে দেখে নেয় তাকে
জরিপ করার ভঙ্গিমায়। লোকটার
চোখের পাতায় মৃত্যু তার শেষ চিহ্ন রেখে গেছে।

কেমন গুঞ্জন ওঠে চতুর্দিকে-একজন বলে,
“লোকটা কি কট্রর জামাতপন্থী ছিল
“আরে তোবা তোবা কোনকালে ঘাতকের
সংশ্রবে সে আসেনি ভুলেও”, অন্যজন
সোজাসাপটা জানায়। তাহ’লে

“সে কি জাতীয়তাবাদী, জাতীয়তাবাদী ব’লে শধু
ফাটিয়েছে গলা নিত্যদিন?”

“না, তেমন কিছু নয়” একজন সুস্পষ্ট মন্তব্য
ছুঁড়ে দিয়ে সাত তাড়াতাড়ি
দূরে সরে যায়।

“তবে কি লোকটা
আওয়ামী লীগের নিষ্ঠাবান কর্মী কোনো” ব’লে কেউ
এক উপভাষার আবীর মুঠোমুঠো ছড়ায় প্রস্থানকালে।
“এ লোক আওয়ামী লীগের কেউ নয় সুনিশ্চিত।

“তা’হলে যে পড়ে আছে রাস্তার ধুলায় বড় একা
সে কি কম্যুনিস্ট একজন?” ভিড় থেকে
একজন গুঞ্জনের নিরাসক্ত ক্যানভাসে কিছু
আঁকা জোঁকা করে জানালেন
উদাসীন, “মার্ক্সবাদে দীক্ষা তার হয়নি কখনো।

“ওসব কিছুই নয়, বস্তুত সে কবি, প্রকৃত মানুষ একজন।
১৭/২/৯৫