১ হাত্সোরের রাজা যাবীন এই সব ঘটনা শুনল। সে কয়েকজন রাজার সৈন্যসামন্তদের একসঙ্গে জড়ো করার কথা চিন্তা করল। মাদোনের রাজা য়োবব, অক্ষফের রাজা শিম্রোণের রাজার কাছে এবং
২ উত্তরাঞ্চলের সমস্ত রাজা, পাহাড় ও মরু অঞ্চলের সমস্ত রাজাকে যাবীন খবর পাঠাল। যাবীন কিন্নেরত, নেগেভ, পশ্চিম পাহাড়, পশ্চিমের নাপথ দোরের রাজাদের কাছে খবর পাঠাল।
৩ যাবীন পূর্ব আর পশ্চিমের কনান সম্প্রদাযের রাজাদের কাছে খবর পাঠাল। সে ইমোরীয়, হিত্তীয়, পরিষীয় এবং পাহাড়ী দেশের য়িবুষীযদের কাছেও খবর পাঠাল। সে মিস্পার কাছে হর্মোণ পর্বতের নীচে য়ে হিব্বীয়রা থাকে তাদের কাছেও খবর পাঠাল।
৪ এই সব রাজার সৈন্যরা জড়ো হল। অসংখ্য য়োদ্ধা, অসংখ্য ঘোড়া আর অসংখ্য রথ মিলে তৈরী হল এক বিশাল বাহিনী। এত লোক সেখানে জড়ো হয়েছিল য়ে মনে হল তারা য়েন সমুদ্রের ধারের বালির দানার মতো অগনিত।
৫ মেরোমের ছোট নদীর ধারে এই সমস্ত রাজা জড়ো হল। তারা তাদের সৈন্যবাহিনীকে একই শিবিরের মধ্যে সমবেত করল। আর কি ভাবে ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা যায় তার পরিকল্পনা করল।
৬ তখন প্রভু যিহোশূয়কে বললেন, “এত সৈন্য দেখে ভয় পেও না। আমি তোমাদের জিতিযে দেব। আগামীকাল এই সময়ের মধ্যে তোমরা তাদের সকলকে মেরে ফেলবে। সমস্ত ঘোড়ার পাযের শিরা কিটে ফেলবে, তাদের সমস্ত রথ পুড়িয়ে দেবে।”
৭ যিহোশূয় এবং তার সমস্ত সৈন্য হঠাত্ শত্রুদের আক্রমণ করল। মেরোম নদীর কাছে তারা শত্রুদের আক্রমণ করল।
৮ প্রভু ইস্রায়েলীয়দের জিতিযে দিলেন। ইস্রায়েল সৈন্যবাহিনী তাদের পরাজিত করে তাড়িয়ে নিয়ে গেল বৃহত্তর সীদোন, মিষ্রফোত্-মযিম আর পূর্বের মিস্পীর উপত্যকার দিকে। সবকটি শত্রুকে মেরে না ফেলা পর্য়ন্ত ইস্রায়েলীয় সৈন্যরা থামল না।
৯ প্রভু যা বলেছিলেন যিহোশূয় তাই করলেন। ঘোড়াগুলোর পাযের শিরা কেটে ফেললেন এবং রথগুলো পুড়িয়ে দিলেন।
১০ তারপর যিহোশূয় ফিরে গিয়ে হাত্সোর শহর দখল করলেন। এবং হাত্সোরের রাজাকে হত্যা করলেন। (ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে য়েসব রাজ্য়গুলি ছিল তাদের মধ্যে হাত্সোরই ছিল সর্বপ্রধান।)
১১ ইস্রায়েলীয় সৈন্যবাহিনী সেই শহরের প্রত্যেককে হত্যা করল। তারা সমস্ত লোককে একেবারে শেষ করে দিল। এক জন লোকও বেঁচে রইল না। তারপর তারা শহরটা বালিয়ে দিল।
১২ যিহোশূয় এই সব শহরের সবকটি দখল করেছিলেন। তিনি শহরের সমস্ত রাজাকে হত্যা করেছিলেন। শহরের সমস্ত কিছুকে তিনি ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। প্রভুর দাস মোশি য়েমন আজ্ঞা করেছিলেন সেই মতো তিনি এই কাজ করেছিলেন।
১৩ কিন্তু ইস্রায়েলীয় সেনাবাহিনী পাহাড়ের ওপরে স্থাপিত কোন শহর বালিয়ে দেয় নি। হাত্সোরই ছিল একমাত্র শহর য়েটি পাহাড়ের ওপরে নির্মিত ছিল এবং য়িহোশূয়ের আদেশে য়েটি তারা পুড়িয়ে দিয়েছিল।
১৪ শহরগুলো থেকে পাওয়া সমস্ত জিনিসপত্র ইস্রায়েলবাসীরা নিজেদের জন্য রেখে দিয়েছিল। শহরের সমস্ত জীবজন্তুকে তারা রেখে দিয়েছিল, যদিও সেখানকার সমস্ত লোককেই তারা মেরে ফেলেছিল। কোন লোককেই তারা বাঁচতে দেয় নি।
১৫ বহুকাল আগে প্রভু তাঁর দাস মোশিকে এই কাজ করবার জন্য আজ্ঞা করেছিলেন। তারপর মোশি এই কাজ করার জন্য যিহোশূয়কে আজ্ঞা করেছিলেন, যিহোশূয় ঈশ্বরের আদেশ পালন করেছিলেন। প্রভু মোশিকে যা আজ্ঞা করেছিলেন যিহোশূয় তার সমস্তই পালন করেছিলেন।
১৬ এই ভাবে যিহোশূয় সমগ্র দেশের সমস্ত লোককে পরাজিত করেছিলেন। পাহাড়ি দেশ নেগেভ, সমগ্র গোশন অঞ্চল, পশ্চিমদিকের পাহাড়তলি, যর্দন উপত্যকা, ইস্রায়েলের সমস্ত পাহাড় পর্বত এবং সেগুলোর কাছাকাছি সমস্ত পাহাড় এই সবই তাঁর অধীনে এলো।
১৭ হালক পর্বতশৃঙ্গ থেকে সেযীরের কাছে লিবানোন উপত্যকার বাল্গাদ পর্য়ন্ত সমস্ত অঞ্চল যিহোশূয়র দখলে এল। লিবানোন উপত্যকাটি হার্মোণ পর্বতশৃঙ্গের নীচে অবস্থিত। সে দেশের সমস্ত রাজাকে তিনি পরাজিত ও নিহত করলেন।
১৮ বহু বছর ধরে এইসব রাজার বিরুদ্ধে যিহোশূয় যুদ্ধ করেছিলেন।
১৯ একমাত্র একটি শহরই ইস্রায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করেছিল। সেটা হচ্ছে গিবিযোন শহর, যেখানে হিব্বীয় জাতির লোকরা বাস করে। অন্য সমস্ত শহর পরাজিত হয়েছিল।
২০ প্রভু চেয়েছিলেন য়েন এসব দেশের লোকরা নিজেদের শক্তিশালী ভাবে। তাহলে তারা ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। এই ভাবেই য়েন তিনি তাদের প্রতি দযা না করে বিনাশ করেন। য়ে ভাবে প্রভু মোশিকে আদেশ দিয়েছিলেন, সেই ভাবেই য়েন তিনি তাদের বিনাশ করেন।
২১ অনাক বংশীয লোকরা হিব্রোণ, দবীর, অনাব এবং যিহূদা অঞ্চলের পাহাড়ি জায়গায় বাস করত। যিহোশূয় তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদের এবং তাদের শহরগুলোকে শেষ করে দিলেন।
২২ ইস্রায়েল ভূখণ্ডে কোন অনাক বংশীয লোক বেঁচে রইল না। তারা শুধু বেঁচে রইল ঘসা, গাত এবং অস্দোদ অঞ্চলে।
২৩ যিহোশূয় সমগ্র ইস্রায়েল ভূখণ্ড নিজের আযত্ত্বাধীনে আনলেন, ঠিক য়ে ভাবে প্রভু বহুকাল বহুকাল আগে মোশিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রভু সেই দেশ তাঁর প্রতিশ্রুতি মত ইস্রায়েলীয়দের দান করেছিলেন। এই দেশ যিহোশূয় ইস্রায়েলের বিভিন্ন পরিবারগোষ্ঠীর মধ্যে ভাগ করে দিয়েছিলেন। অবশেষে যুদ্ধ শেষ হল এবং দেশে শান্তি ফিরে এলো।