১ তখন তেমনের ইলীফস ইয়োবকে উত্তর দিলেন:
২ “ইয়োব, যদি তুমি সত্যই জ্ঞানী হতে তুমি তোমার অর্থহীন ব্যক্তিগত মতামত দিয়ে উত্তর দিতে না! এক জন জ্ঞানী ব্যক্তি পূর্বের গরম বাতাসে নিজেকে পূর্ণ করে না।
৩ তুমি কি মনে কর একজন জ্ঞানী মানুষ অর্থহীন কথা দিয়ে তর্ক করবে এবং এমন কথা বলবে যাতে কোন লাভ নেই?
৪ ইয়োব, যদি তোমার নিজেরই পথ থাকতো তাহলে কেউ আর ঈশ্বরকে শ্রদ্ধা করে তাঁর কাছে প্রার্থনা করতো না।
৫ য়ে সব বিষয় তুমি বলেছো তাতে তোমার পাপ স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে। ইয়োব, বাক্চাতুরীর সাহায্যে তুমি তোমার পাপকে ঢাকতে চাইছো।
৬ তুমি য়ে ভুল করেছো, এ কথা আমার প্রমাণ করার দরকার নেই। কেন? নিজের মুখে তুমি যা যা বললে তাই প্রমাণ করে য়ে তুমি ভুল করেছো। তোমার নিজের ওষ্ঠ দ্বয তোমার বিরুদ্ধে বলছে।
৭ “ইয়োব, তুমি কি মনে কর য়ে তুমিই প্রথম জন্মেছো? তুমি কি এই পাহাড়গুলির জন্মের আগে জন্মেছ?
৮ তুমি কি ঈশ্বরের গোপন পরিকল্পনা শুনেছিলে? তুমি কি নিজেকেই এক মাত্র জ্ঞানী ভাবো?
৯ ইয়োব, তুমি যা জান আমরা ঠিক ততটাই জানি! তুমি যতটা বোঝ আমরাও ঠিক ততটাই বুঝি।
১০ যাদের মাথায় পাকা চুল তারা এবং বয়স্ক লোকে আমাদের সঙ্গে একমত হয়। হ্যাঁ, এমন কি তোমার পিতার চেয়েও যারা বয়স্ক তারাও আমাদেরই পক্ষে।
১১ ঈশ্বর তোমাকে স্বস্তি দিতে চেষ্টা করেন এবং আমরা খুব শান্ত ভাবে তোমার সঙ্গে কথা বলি। কিন্তু তোমার পক্ষে তা য়থেষ্ট নয়।
১২ ইয়োব, তুমি কেন এত আবেগপ্রবণ? কেন তোমার চোখ লাল হয়ে যায়?
১৩ যখন তুমি এই সব ক্রোধর কথা বল তখন তুমি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে চলে যাও।
১৪ “এক জন মানুষ প্রকৃতই শুদ্ধ হতে পারে না। এক জন মানুষ কখনও ঈশ্বরের চেয়ে বেশী সঠিক হতে পারে না!
১৫ ঈশ্বর তাঁর বার্তাবাহকদেরওবিশ্বাস করেন না। এমনকি ঈশ্বরের তুলনায় স্বর্গও শুদ্ধ নয়।
১৬ মানুষও অপদার্থ। মানুষ নোংরা এবং নষ্ট। সে জলের মতই পাপ গলাধঃকরণ করে।
১৭ “আমার কথা শোন ইয়োব, আমি তোমাকে তা বুঝিযে বলবো। আমি যা জানি, তোমায় তা বলবো।
১৮ জ্ঞানী লোকরা আমাকে যা বলেছেন সেই সব কথা আমি তোমায় বলবো। জ্ঞানী লোকের পূর্বপুরুষরা এই কথাগুলো তাদের বলে গিয়েছিলেন। তাঁরা আমার কাছে কোন গোপন কথা লুকিয়ে রাখেননি।
১৯ তাঁরা একাই তাদের দেশে বাস করেছেন। সেখান থেকে কোন বিদেশীই যায় নি। তাই কোন লোকই তাদের কোন অদ্ভ্ুত আদর্শের কথা বলে নি।
২০ এই সব জ্ঞানী লোক বলেছেন, এক জন দুষ্ট লোক সারা জীবন কষ্ট পায়। এক জন নিষ্ঠুর লোক জীবনের সারা বছর কষ্ট পায়।
২১ প্রত্যেকটি শব্দ তাকে ভীত করে। সে যখন মনে করে য়ে সে নিরাপদে আছে, তখন শএু তাকে আক্রমণ করবে।
২২ এক জন দুষ্ট লোক প্রচণ্ড হতাশাগ্রস্ত এবং অন্ধকারকে এড়াবার তার কোন পথই নেই। কোন একটা জায়গায় একটা তরবারী আছে যা তাকে হত্যা করার জন্য অপেক্ষা করছে।
২৩ সে এখানে ওখানে খাবারের খোঁজে ঘুরে বেড়ায়। সে জানে য়ে কঠিন সময় আসন্ন।
২৪ দুঃখ এবং যন্ত্রণা তাকে ভীত করে। এগুলো তাকে রাজার মতো আক্রমণ করে য়েন তাকে ধ্বংসের জন্য প্রস্তুত।
২৫ কেন? কারণ দুষ্ট লোকরা ঈশ্বরের বাধ্য হতে চায় না- তারা ঈশ্বরকে ঘুষি দেখায়, এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে পরাজিত করতে চায়।
২৬ দুষ্ট লোকরা ভীষণ একগুঁযে। তারা একটা মোটা শক্ত ঢাল নিয়ে ঈশ্বরকে আক্রমণ করে।
২৭ “এক জন লোক ধনী এবং মোটা হতে পারে,
২৮ কিন্তু সে ধ্বংস হয়ে যাওয়া শহরে, যেখানে কেউ থাকে না অথবা য়ে সমস্ত বাড়ীগুলো ধ্বংস হবার জন্য ঠিক হয়েছে সেগুলোতে বাস করবে।
২৯ দুষ্ট লোকরা দীর্ঘদিন ধরে ধনী থাকবে না। তার সম্পদ স্থায়ী হবে না। তার ফসল বাড়বে না।
৩০ দুষ্ট লোক অন্ধকারকে এড়াতে পারবে না। সে সেই গাছের মতো হবে যার পাতা রোগে শুকিয়ে যায় এবং বাতাস তাদের সবাইকে উড়িযে নিয়ে যায়।
৩১ দুষ্ট লোকরা অর্থহীন বিষয়ের ওপর কখনো নির্ভর করে না যা তাদের বিপথে নিয়ে যাবে। কেন? কারণ তারা কিছুই পাবে না।
৩২ দুষ্ট লোকে তাদের পূর্ণ ব্যাপ্তির জীবনযাপন করতে পারবে না। তারা হবে একটি গাছের মত যার ডালপালা শুকিয়ে ঝরে গেছে এবং মরে গেছে।
৩৩ দুষ্ট লোকে সেই দ্রাক্ষা গাছের মতো হবে যার দ্রাক্ষা ফল পাবার আগেই শুকিয়ে পড়ে যায়। ঐ লোকটি সেই জলপাই গাছের মতো হবে যার মুকুল ঝরে যায়।
৩৪ কেন? কারণ এক দল ঈশ্বরবিহীন মানুষ ভাল ফল ফলাতে পারে না। যারা ঘুস নেয়, আগুন তাদের বাড়ী ধ্বংস করে দেয়।
৩৫ মন্দ লোকরা সমস্যাকে ধারণ করে এবং মন্দকে জন্ম দেয়। তাদের গর্ভে জন্ম নেয় মিথ্যা।”