অকস্মাৎ আমার দুর্বল কাঁধে কে রাখলো হাত?
বিদ্যুল্লতা খেলে যায়,
চোখ হয় তারা আর দ্যুলোক ভ্যূলোক
কে জানে কিসের টানে অন্য মানে পায়। লোকে বলে
পথ দেখাবার ছলে কখনো কখনো
অপদূত ছদ্মবেশে নেমে আসে পথে,
তখন সংগীত থেমে যায় লহমায় গাছে গাছে
পাখি যেন বেবাক মাটির ঢেলা। যাচাই করার
কিছু আছে ভেবে বারবেলা
ঘন ঘন পেছনে তাকাই-
কেউ নেই, শুধু তর্জনীর স্পর্শ টের পাই কাঁধে।
ফিরে তাকাতেই নির্জনতা-কামড়ানো পথরেখা
কণ্টকিত আর
আমার শিরায় বেজে ওঠে উত্তরাধিকার, দেখি
অনেক পুরানো এক দীঘি থেকে দু’টি শাদা হাতে
আমার উদ্দেশে পানি কেটে
উঠে আসে। এক হাতে চকচকে শাণিত কুঠার,
অন্য হাতে নক্ষত্র-খচিত তলোয়ার। মন্ত্রমুগ্ধ তুলে নিই
সম্ভ্রমে মাটিতে নুয়ে তারা-ঝলসিত
অসি, দশমিক হয় গভীর সংগীতময়, গাছে
পাতাগুলি আরো বেশি সতেজ, সবুজ।
আকন্দফুলের গন্ধ পথময়, মাথায় শিশির।
তবে কি দীক্ষিত আমি? এই যে এখন
ব্যাপক কুয়াশা চিরে
আলপথ বেয়ে শুরু হলো চলা, শুধু
চলা, এর শেষ
কোথায় জানি না, দায়ভাগ
মাথার ভেতরে ফুটে আছে শ্বেতপদ্ম, রমণীর
প্রেম থেকে দূরে এই একলা ভ্রমণ।
চতুর্দিকে শক্রদের ঢ্যাঙা ছায়া, ওদের নিখুঁত
যুদ্ধসাজ সন্ধ্যা আনে চোখে,
তারার ছন্দিত তলোয়ারে হবে ওরা খান খান
সুনিশ্চিত, এবং জোনাকি-অভ্যর্থিত
পথে কামিনীর ঘ্রাণ নিয়ে
বাড়ি ফেরা হবে না কখনো।