বন্ধ ঘরে প্রতিদিন প্রতীক্ষার ভার বয়ে চলি; অন্ধকারে
সর্বক্ষণ তার পদধ্বনির দিকেই কান পেতে রাখি আর
নিদ্রার মিতালি করি অস্বীকার, ভয়
যদি সে দরজা থেকেই নিঃশব্দে অভ্যর্থনাহীন
চলে যায়। বার-বার দরজার দিকে ছুটে যাই,
কিন্তু তার দেখা নেই আমার এই নিবাসে কোথাও।
মধ্যরাতে অকস্মাৎ একটি গোলাপ,
আমার নিভৃত ঘরে ভাসমান, যেন ব্যালেরিনা;
বলল, ‘কতকাল
তাকাও না ফিরেও আমার দিকে, তাই
সকল বন্ধন ছিঁড়ে স্বয়ম্বরা হলাম এখন।
গোলাপি সত্তায় তার উত্তর বুলোই
হৃদয়ে তোমার ক্রূর কাঁটা রক্ত ঝরায় কেবলি।
তোমাকে ডাকিনি আমি, মিছেমিছি তুমি কেন এলে?
‘শুধু আমি নই’, বলল সে খণ্ডিতা নারীর মতো,
‘নক্ষত্র, চন্দনা পাখি, নদীর কিনার,
এবং জ্যোৎস্নার মোজাইক
সবাই ডাকছে
তোমাকে বাইরে, কতকাল তুমি এই বন্ধ ঘরে
ব’সে আছ, উদাসীন। নিঃসঙ্গতা তোমাকে করাচ্ছে
তুর্কি স্নান।
আমি আজ অন্য কারো ডাকে সাড়া দিতে
ঘুম গুম খুন করে বসে নেই। দোহাই তোমার,
চলে যাও, আমি শুধু একটি পদধ্বনির জন্যে
প্রতীক্ষায় আছি।
দরজায় টোকা পড়ল কি ফের? যদি গিয়ে তাকে
না দেখি সে ভয়ে দরজাটা আর খোলাই হয় না।