মুখোশ

এখন আমাকে রাশি রাশি ফুল, ফুলের বাহারী তোড়া দিচ্ছো,
দাও, করবো না
বারণ। কারণ চলৎশক্তিহীন। প্রজাপতি
কিংবা একরত্তি মাছি এসে যদি বসে নাকের ডগায়, সত্যি
পারবো না তাড়াতে ওদের হাত নেড়ে।

লোবান অথবা
আগরবাতির ঘ্রাণ আমাকে করে না আমোদিত। পড়ে আছি
চিত হয়ে দৃষ্টিহীন দৃষ্টি নিয়ে। হু হু কান্না অথবা গোলাপজল
উভয়ের প্রতি উদাসীন। আমাকে করাবে স্নান
যে লোকটা চুলকাচ্ছে সে নধর পাছা তার। যে তম্বীর স্তন
হয়নি নমিত শোকে, তার
যৌবন আমাকে জপায় না আর জীবনের
আগড়ম বাগড়ম শ্লোক।

এখন আমাকে দিচ্ছো ফুল, দাও; দাও ঢেকে
আপাদমস্তক, উঠবে না নিষেধের
তর্জনী আমার। ট্রাকে চেপে কিছুক্ষণ
পরেই বেড়াতে যাবো বনানীতে। ফুরফুরে হাওয়া
লাগবে নিঃসাড় হাড়ে।

আমি ভাঙা বাবুই পাখির বাসা এক,
বড় একা পড়ে আছি স্বপ্নহীন দীর্ঘ বারান্দায়।
তোমরা কি আজ আমাকে পরাতে চাও নওশার সাজ?
পরাও, বারণ আমি করবো না এখন। যা খুশি
তোমরা করতে পারো, তবে সুর্মা কিংবা অন্য কোনো
মৃত্যুগন্ধী প্রসাধনে খুব বেশি বদলে দিও না
আমার নিজস্ব মুখ, যেমন চেহারা ঠিক তেমনটি থাক-
যেন ভিন্ন কারো মুখ আমার নিজের
মুখচ্ছদ ফুঁড়ে
বেরিয়ে না পড়ে, দ্যাখো এখন মুখোশহীন আমি;
পুরোনো মুখোশ, যার চাপে
আমৃত্যু ছিলাম আমি অস্বস্তির ক্লিষ্ট ক্রীড়নক,
খসে গ্যাছে এক লহমায়। দোহাই তোমরা আর
দিওনা আমার মুখে সেঁটে
অন্য কোনো দুর্বহ মুখোশ।