প্রাচীন প্রেমের কাব্য আমি পড়ছিলাম নির্জনে
মধ্যরাতে টেবিল-ল্যাম্পের ফুল্ল আলো সুষমায়।
পংক্তির সংশৃদ্ধ সখ্যে অকস্মাৎ মৃতির পীড়নে
মন হলো ভারাতুর। ভুলতে পারি না তাকে হায়।
অথচ ভুলতে চাই তাকে, যে আমার রক্তমজ্জা
শুষে নেয় ক্রমাগত অন্তরাল থেকে। বুঝি তাই
শাদা কফিনের মতো মনে হয় আমার এ শয্যা;
ভীষণ উঁচিয়ে থাকে তীক্ষ্ম ছুরি নেপথ্যে কসাই।
অবশ্য সে নয় স্মৃতিসঙ্গী সকল সময়, যদি
সত্যের খাতিরে বলি। দৈনন্দিন খুঁটিনাটি কাজে,
ককটেল পাটিতে আড্ডায় মধ্যনিশীথ অবধ
কাটে আর সময় করুণ বেহালার মতো বাজে!
এরই মধ্যে কখনো সখনো তার স্মৃতির ফোয়ারা
প্রবল উচ্ছ্রিত হয়। সে আমাকে আজো, হে হৃদয়,
স্মরণে রেখেছে কিনা, সে-কথা বিবেচ্য নয়। যারা
হিসেব নিকেশে দড়, এই বিবেচনা তাদেরই বিষয়।
হয়তো সে আমাকে গিয়েছে ভুলে, অথবা নবীন
কারো দেহমনের উত্তাপে সেঁকে মাতাল যৌবন
কাটে তার রাত্রিদিন। তাতে মুখ হবে ন মলিন-
কেননা একাগ্র নয় আর আমারও অতিজ্ঞ মন।