১ হেরোদ যখন রাজা ছিলেন, সেই সময় যিহূদিয়ার বৈত্লেহমে যীশুর জন্ম হয়। সেই সময় প্রাচ্য থেকে কয়েকজন পণ্ডিত জেরুশালেমে এসে যীশুর খোঁজ করতে লাগলেন।
২ তাঁরা এসে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইহুদীদের য়ে নতুন রাজা জন্মেছেন তিনি কোথায়? কারণ পূর্ব দিকে আকাশে আমরা তাঁর তারা দেখে তাঁকে প্রণাম জানাতে এসেছি।’
৩ রাজা হেরোদ একথা শুনে খুব বিচলিত হলেন এবং তাঁর সঙ্গে জেরুশালেমের সব লোক বিচলিত হল।
৪ তখন তিনি ইহুদীদের মধ্যে যাঁরা প্রধান যাজক ও ব্যবস্থার শিক্ষক ছিলেন, তাঁদের ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, মশীহ (খ্রীষ্ট) কোথায় জন্মগ্রহণ করবেন?
৫ তাঁরা হেরোদকে বললেন, ‘যিহূদিয়া প্রদেশের বৈত্লেহমে, কারণ ভাববাদী সেরকমই লিখে গেছেন:
৬ ‘আর তুমি যিহূদা প্রদেশের বৈত্লেহম, তুমি যিহূদার শাসনকর্তাদের চোখে কোন অংশে নগন্য নও, কারণ তোমার মধ্য থেকে একজন শাসনকর্তা উঠবেন যিনি আমার প্রজা ইস্রায়েলকে চরাবেন।'” মীখা ৫:২
৭ তখন হেরোদ সেই পণ্ডিতদের সঙ্গে একান্তে দেখা করার জন্য তাঁদের ডেকে পাঠালেন। তিনি তাঁদের কাছ থেকে জেনে নিলেন ঠিক কোন সময় তারাটা দেখা গিয়েছিল।
৮ এরপর হেরোদ তাদের বৈত্লেহমে পাঠিয়ে দিলেন আর বললেন, ‘দেখ, তোমরা সেখানে গিয়ে ভাল করে সেই শিশুর খোঁজ কর; আর খোঁজ পেলে, আমাকে জানিয়ে য়েও,. য়েন আমিও সেখানে গিয়ে তাঁকে প্রণাম করতে পারি।’
৯ তাঁরা রাজার কথা শুনে রওনা দিলেন। তাঁরা পূর্ব দিকে আকাশে য়ে তারাটা উঠতে দেখেছিলেন, সেটা তাঁদের আগে আগে চলল এবং শিশুটি য়েখানে ছিলেন তার ওপরে থামল।
১০ তাঁরা সেই তারাটি দেখে আনন্দে আত্মহারা হলেন।
১১ পরে সেই ঘরের মধ্যে ঢুকে শিশুটি ও তাঁর মা মরিয়মকে দেখতে পেয়ে তাঁরা মাথা নত করে তাঁকে প্রণাম করলেন ও তাঁর উপাসনা করলেন। তারপর তাঁদের উপহার সামগ্রী খুলে বের করে তাঁকে সোনা, সুগন্ধি গুগ্গুল ও সুগন্ধি নির্যাস উপহার দিলেন।
১২ এরপর ঈশ্বর স্বপ্নে তাঁদের সাবধান করে দিলেন য়েন তাঁরা হেরোদের কাছে ফিরে না যান, তাই তাঁরা অন্য পথে নিজেদের দেশে ফিরে গেলেন।
১৩ তাঁরা চলে যাবার পর প্রভুর এক দূত স্বপ্নে য়োষেফকে দেখা দিয়ে বললেন, ‘ওঠো!’ শিশুটি ও তাঁর মাকে নিয়ে মিশরে পালিয়ে যাও। যতদিন না আমি তোমাদের বলি, তোমরা সেখানেই থেকো, কারণ এই শিশুটিকে মেরে ফেলার জন্য হেরোদ এর খোঁজ করবে।’
১৪ তখন য়োষেফ উঠে সেই শিশু ও তাঁর মাকে নিয়ে রাতে মিশরে রওনা হলেন।
১৫ আর হেরোদের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকলেন। এরূপ ঘটল যাতে ভাববাদীর মাধ্যমে প্রভুর কথা সফল হয়; প্রভু বললেন, ‘আমি মিশর থেকে আমার পুত্রকে ডেকে আনলাম।’
১৬ হেরোদ যখন দেখলেন য়ে সেই পণ্ডিতরা তাঁকে বোকা বানিয়েছে, তখন তিনি প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হলেন। তিনি সেই পণ্ডিতদের কাছ থেকে য়ে সময়ের কথা জেনেছিলেন, সেই হিসাব মতো দু’বছর ও তার কম বয়সের যত ছেলে বৈত্লেহম ও তার আশেপাশের অঞ্চলে ছিল, সকলকে হত্যা করার হুকুম দিলেন।
১৭ এর ফলে ভাববাদী যিরমিয়র মাধ্যমে ঈশ্বর য়ে কথা বলেছিলেন তা পূর্ণ হল:
১৮ ‘রামায় একটা শব্দ শোনা গেল, কান্নার রোল ও তীব্র হাহাকার, রাহেল তাঁর সন্তানদের জন্য কাঁদছেন। তিনি কিছুতেই শান্ত হতে চাইছেন না, কারণ তারা কেউ আর বেঁচে নেই।’ যিরমিয় ৩১:১৫
১৯ হেরোদ মারা যাবার পর প্রভুর এক দূত মিশরে য়োষেফকে স্বপ্নে দেখা দিয়ে বললেন,
২০ ‘ওঠো! এই শিশু ও তাঁর মাকে সঙ্গে নিয়ে ইস্রায়েল দেশে ফিরে যাও, কারণ যাঁরা এই ছেলের প্রাণ নাশের চেষ্টা করেছিল তারা সকলে মারা গেছে।’
২১ তখন য়োষেফ উঠে সেই শিশু ও তাঁর মাকে নিয়ে ইস্রায়েল দেশে গেলেন।
২২ কিন্তু য়োষেফ যখন শুনলেন য়ে হেরোদের জায়গায় তাঁর পুত্র আর্খিলায় যিহূদিয়ার রাজা হয়েছে, তখন তিনি সেখানে ফিরে যেতে ভয় পেলেন। পরে আর এক স্বপ্নে তাঁকে সাবধান করে দেওয়া হল,
২৩ তখন তিনি গালীলে ফিরে নাসরত্ নগরে বসবাস করতে লাগলেন। এই রকম ঘটল য়েন ভাববাদীর মাধ্যমে ঈশ্বর যা বলেছিলেন তা পূর্ণ হয়: তিনি নাসরতীয়বলে আখ্যাত হলেন।