ভাসমান মেঘে যাচ্ছি

ভাসমান মেঘে যাচ্ছি জানি না কোথায়। আচমকা
টুপ করে যদি পড়ে যাই কোনো পাহাড়ে অথবা
বিয়াবান বনে, তবে নির্ঘাৎ পশুর খাদ্য হয়ে
যাবো, জানবে না কেউ। আপাতত মেঘে চেপে দূরে,
বহুদূরে অনেক উঁচুতে যাত্রী আমি। কী সুন্দর
বসেছে তারার মেলা। এখানে তো মহানন্দে বাস করা যায়।

অথচ আমাকে কেউ ‘স্বাগতম’ বলে কাছে ডেকে
নিচ্ছে না, সবাই এক নিঃশব্দ হেলায়
দলে দলে যাচ্ছে হেঁটে অথবা বসছে অপরূপ
পুষ্পকুঞ্জে, আলাপে উঠছে মেতে। কারা ওরা? অবয়ব যেন
মানুষেরই মতো, তবু নয় তো মানব। খাপছাড়া,
অনাহূত যেন আমি। কী করি? কী করি?

বাতাসকে বলি নিচু কণ্ঠস্বরে, ‘আমাকে উড়িয়ে
নিয়ে যাও অন্য কোনোখানে। আমি আর
পারি না সইতে এই হিম নীরবতা, এ নিষ্ঠুর
অবহেলা। দয়ালু বাতাস
আমাকে নক্ষত্র-মেলা থেকে নিয়ে যায় সবুজ উপত্যকায়
এক লহমায় আর ঘাসের সুঘ্রাণে যেন দারুণ মাতাল হয়ে যাই।

নেশা কেটে গেলে জনহীন, ঘাসময় উপত্যকা
বড় একঘেয়ে, অতিশয়
বেগানা, নির্দয় মনে হয়। কিছুকাল এখানে কাটালে জানি
নির্ঘাত উন্মাদ হয়ে যাবো। যদি আনন্দের সুরে
প্রায়শ স্পন্দিত হতে চাই, চাই নিত্য মানবের কলরবে
প্রেরণার ছন্দ পেতে, তবে এখানেই ডেরা বেঁধে নিতে হবে।
২-১০-২০০৩