উস্কোখুশকো যুবকটি অতল জলে সাঁতারহীন।
পকেট হাতড়ে সিগারেটের শস্তা
প্যাকেট খুঁজে নৈরাশ্যকে পায়। মলিন
অথবা ঝকঝকে কোনো নোট নেই
খুচরো পয়সাও পকেট পলাতক।
ভবিষ্যৎ ওকে ঘন ঘন দেখাচ্ছে মরীচিকা।
যুবক ক্লান্ত পায়ে বিকেলের রাস্তায় হাঁটে,
কখনো তাকায় কেতাদুরস্ত
কোনো দোকানের দিকে; সমস্ত
শহর থেকে চাকরিবাকরি গায়েব,
দরখাস্তের স্তূপের নিচে সম্প্রতি
ওর স্বপ্ন আর নধরকান্তি সাধের
ভীষণ শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। পুলিশ
ওকে পরখ করে দূর থেকে, যেন সে ছিঁচকে চোর।
যুবক চকিতে দ্যাখে একটি মেয়ে
রিক্শায় ঝলক খেলিয়ে চলে গেল।
ওর পরনে কি ছিল শালোয়ার কামিজ?
মেয়েটিকে কোথায় যেন কোন্ কালে
দেখেছে মনে পড়ে?
একবার ইচ্ছে হলো পেছনে দৌড়ে গিয়ে
রিক্শা থামিয়ে এই হতচ্ছাড়া হালতে
কি কথা বলবে তার সঙ্গে সদর স্ট্রিটে দাঁড়িয়ে?
অচেনা পথচারীর ধাক্কা খেল যুবক
মেয়েটি যে ওর পরিচিতা কিংবা একদা-সহপাঠিনী
হবেই তারই বা কি নিশ্চয়তা আছে? মুখের
আদলে কিছু মিল থাকলেই ইচ্ছা এবং
বাস্তবের ফারাক ঘোচে না সবসময়
মেসের ময়লা বালিশে যুবা মাথা রেখেছে ভরসন্ধ্যায়;
আগামীকাল দৈবাৎ তার কোনো চাকরি
জুটে যাবে, এমন প্রত্যাশা নির্বোধ দুঃস্বপ্নের শামিল,
তবে উস্কোখুশ্কো চুল, ক’দিনের না-কামানো দাড়ি এবং
পেটে ক্ষুধার সুতীক্ষ্ণ কামড় নিয়ে
পায়রাময় এক চিলতে আকাশের দিকে তাকিয়ে
যে ভাববে, রিক্শার ঝলক অতল জলে
তাকে না চাইতে ধার দিয়েছে কিছু খড়কুটো।