বুখারি হাদিস নং ৩৩২৮

হাদীস নং ৩৩২৮

মূসা ইবনে ইসমাঈল রহ………..আবদুর রাহমান ইবনে আবু বকর রা. বর্ণনা করেন, আসহাবে সুফফার কতিপয় অসহায় দরিদ্র লোক ছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার বললেন, যার ঘরে দুজনের পরিমাণ খাবার আছে সে যেন এদের মধ্য থেকে তৃতীয় একজন নিয়ে যায়। আর যার ঘরে চার জনের পরিমাণ খাবার আছে সে এদের মধ্য থেকে পঞ্চম একজন বা ষষ্ঠ একজনকে নিয়ে যায় অথবা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছেন। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিলেন দশজন এবং আবু বকর রা. তিনজন নিলেন। আবদুর রাহমান রা. বলেন, (আমরা বাড়ীতে ছিলাম তিনজন) আমি আমার আব্বা ও আম্মা। আবু উসমান রা. রাবী বলেন, আমার মনে নাই আবদুর রাহমান রা. কি ইহাও বলেছিলেন যে আমার স্ত্রী ও আমাদের পিতা-পুত্রের একজন গৃহভৃত্যও ছিল। আবু বকর রা. ঐ রাতে নবীজীর বাড়ীতেই খেয়ে নিলেন এবং ইশার সালাত পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করলেন। ইশার সালাতের পর পুনরায় তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গৃহে গমন করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রাতের আহার গ্রহণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তথায় অবস্থান করলেন। অনেক রাতের পর গৃহে ফিরলেন। তখন তাঁর স্ত্রী তাকে বললেন, মেহমান পাঠিয়ে দিয়ে আপনি এতক্ষণ কোথায় ছিলেন? তিনি বললেন, তাদের কি এখনো রাতের আহার দেওনি। স্ত্রী বললেন, আপনার না আসা পর্যন্ত তারা আহার খেতে রাযী হননি। তাদেরকে ঘরের লোকজন আহার দিয়েছিল। কিন্তু তাদের অসম্মতির নিকট আমাদের লোকজনে হার মানতে হয়েছে। আবদুর রাহমান রা. বলেন, আমি (অবস্থা বেগতিক দেখে) তাড়াতাড়ি কেটে পড়লাম। আবু বকর রা. (আমাকে উদ্দেশ্য করে) বললেন, ওরে বেওকুফ? আহস্মক! আরো কিছু কড়া কথা বলে ফেললেন। তারপর মেহমান পক্ষকে সম্বোধন করে বললেন, আপনারা খেয়ে নিন। আমি কিছুতেই খাবনা। (মধ্যে আরো কিছু কথা কাটাকাটি হয়ে গেল অবশেষে সকলেই খেতে বসলেন। আবদুর রাহমান রা. বলেন, আল্লাহর কসম, আমরা যখন গ্রাস তুলে নেই তখন দেখি পাত্রের খাবার অনেক বেড়ে যায়। খাওয়ার শেষে আবু বকর রা. লক্ষ্য করলেন যে পরিতৃপ্তভাবে আহারের পরও পাত্রে খাবার পূর্বাপেক্ষা অধিক রয়ে গেছে। তখন স্ত্রীকে লক্ষ্য করে বললেন, হে বনী ফিরাস গোত্রের বোন, ব্যাপার কি? তিনি বললেন, হে আমার নয়নমণি। খাদ্যের পরিমাণ এখন তিন গুণের চেয়েও অধিক রয়েছে। আবু বকর রা. তা থেকে কয়েক গ্রাস খেলেন এবং বললেন, আমার কসম শয়তানের প্ররোচনায় ছিল। তারপর অবশিষ্ট খাদ্য র-এর নিকট নিয়ে গেলেন এবং ভোর পর্যন্ত ঐ খাদ্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হেফাযতে রইল । রাবী বলেন, আমাদের ও অন্য একটি গোত্রের মধ্যে সন্ধি ছিল। চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়াতে তাদের মোকাবেলা করার জন্য আমাদের বার জনকে নেতা মনোনীত করা হল। প্রত্যেক নেতার অধীনে আবার কয়েক জন করে লোক ছিল। আল্লাহই ভাল জানেন তাদের প্রত্যেকের সাথে কতজন করে দেয়া হয়েছিল। আবদুর রাহমান রা. বলেন, এদের প্রত্যেকেই এ খাবার থেকে খেয়ে নিলেন। অথবা তিনি যা বলেছেন।