2 of 2

প্রত্যাদেশ ১৬

১ তখন আমি মন্দির থেকে এক উদাত্ত কন্ঠস্বর শুনতে পেলাম, তা ঐ সাতজন স্বর্গদূতকে বলছে, ‘যাও, ঈশ্বরের রোষের সেই সাতটি বাটি পৃথিবীতে ঢেলে দাও।’
২ তখন প্রথম স্বর্গদূত গিয়ে পৃথিবীর ওপরে তাঁর বাটিটি ঢেলে দিলেন, তাতে যাঁরা সেই পশুর ছাপ ধারণ করেছিল, যাঁরা তাঁর মূর্তির উপাসনা করেছিল তাদের গায়ে এক কুত্‌সিত বেদনাদায়ক ঘা দেখা দিল।
৩ এরপর দ্বিতীয় স্বর্গদূত তাঁর বাটিটি সমুদ্রের উপর ঢেলে দিলেন। তাতে সমুদ্রের জল মরা মানুষের রক্তের মতো হয়ে গেল, আর তাতে সমুদ্রের মধ্যে যত জীবন্ত প্রাণী ছিল সবই মারা পড়ল।
৪ এরপর তৃতীয় স্বর্গদূত তাঁর বাটিটি পৃথিবীর নদনদী ও জলের উত্‌সে ঢেলে দিলেন, তাতে সব জল রক্ত হয়ে গেল।
৫ তখন আমি জল সমুদ্রের স্বর্গদূতকে বলতে শুনলাম:‘তুমি আছ ও ছিলে, তুমিই পবিত্র, তুমি ন্যায়পরায়ণ কারণ তুমি এইসব বিষয়ের বিচার করেছ।
৬ ওরা পবিত্র লোকদের ও ভাববাদীদের রক্তপাত করেছে; আর তার প্রতিফলস্বরূপ আজ তুমিও এই সব লোককে রক্তপান করতে দিয়েছ, এটাই এদের প্রাপ্য়।’
৭ তখন আমি যজ্ঞবেদীকে বলতে শুনলাম,‘হ্যাঁ, প্রভু ঈশ্বর যিনি সর্বশক্তিমান, তোমার বিচার সত্য ও ন্যায়সঙ্গত।’
৮ পরে চতুর্থ স্বর্গদূত সূর্যের ওপরে তাঁর বাটিটি ঢেলে দিলেন। তাতে লোকদের আগুনে পোড়াবার ক্ষমতা সূর্য়কে দেওয়া হল।
৯ তখন সেই প্রচণ্ড তাপে মানুষদের পোড়ানো হল। ঈশ্বরকে তারা অভিশাপ দিতে লাগল। এই সমস্ত আঘাতের উপর ঈশ্বরের কর্তৃত্ত্ব ছিল; কিন্তু তারা তবু তাদের মন ফিরালো না আর ঈশ্বরের মহিমা কীর্তন করল না।
১০ এরপর পঞ্চম স্বর্গদূত তাঁর বাটিটি সেই পশুর সিংহাসনের ওপর ঢেলে দিলেন। ফলে তার রাজ্যের সব জায়গায় ঘোর অন্ধকার হয়ে গেল, আর লোকেরা যন্ত্রণায় নিজেদের জিভ কামড়াতে লাগল।
১১ বেদনা ও ক্ষতের জন্য তারা স্বর্গের ঈশ্বরকে অভিশাপ দিতে লাগল, কিন্তু তারা তাদের কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা করল না।
১২ এরপর ষষ্ঠ দূত তার বাটিটি নিয়ে মহানদী ইউফ্রেটিসের ওপর ঢেলে দিলেন। তাতে নদীর জল শুকিয়ে গেল ও প্রাচ্যের রাজাদের জন্য আসার পথ প্রস্তুত হল।
১৩ এরপর আমি দেখলাম সেই সাপের মুখ থেকে, পশুর মুখ থেকে ও ভণ্ড ভাববাদীর মুখ থেকে ব্যাঙের মতো দেখতে একটি একটি করে তিনটি অশুচি আত্মা বেরিয়ে এল।
১৪ সেই অশুচি আত্মারা ভূতের আত্মা, যাঁরা নানা অলৌকিক কাজ করে। তারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বিরুদ্ধে মহাবিচারের দিনে যুদ্ধ করার জন্য সমস্ত জগত্ ঘুরে রাজাদের একত্রিত করল।
১৫ ‘শোন! চোর য়েমন আসে আমি তেমনি আসব। ধন্য সেই ব্যক্তি য়ে জেগে থাকে, আর নিজের পোশাক নিজের কাছে রাখে, যাতে তাকে উলঙ্গ হয়ে না বেড়াতে হয় এবং লজ্জায় না পড়তে হয়।’
১৬ পরে ঐ অশুচি আত্মারা ইব্রীয় ভাষায় যাকে হরমাগিদোন বলে সেই স্থানে নিয়ে এসে রাজাদের একত্রিত করল।
১৭ এরপর সপ্তম স্বর্গদূত আকাশের ওপর তাঁর বাটিটি ঢেলে দিলেন। তখন স্বর্গের মন্দিরের সেই সিংহাসন থেকে শোনা গেল এক পরম উদাত্ত কন্ঠস্বর, ‘সমাপ্ত হল!’
১৮ তাতে বিদ্য়ুত্ ঝলক, মেঘগর্জন, বজ্রপাত এবং ভয়ঙ্কর এক ভূমিকম্প হল। পৃথিবীতে মানুষের উত্‌পত্তিকাল থেকে এমন ভূমিকম্প আর কখনও হয় নি।
১৯ সেই মহানগরী তাতে ভেঙ্গে টুকরো হয়ে গেল, আর ধূলিসাত্ হয়ে গেল বিধর্মীদের সব শহর। ঈশ্বর মহান বাবিলকে শাস্তি দিতে ভুলে যান নি। তিনি তাঁর প্রচণ্ড ক্রোধে পূর্ণ সেই পানপাত্র মহানগরীকে দিলেন।
২০ এর ফলে সমস্ত দ্বীপ অদৃশ্য হয়ে গেল, আর পর্বতমালা সমভূমি হয়ে গেল।
২১ আকাশ থেকে মানুষের ওপরে বিরাট বিরাট শিলা পড়তে লাগল, এক একটি শিলা ছিল এক এক মন ভারী; আর এই শিলা বৃষ্টির জন্য লোকরা ঈশ্বরের নিন্দা করতে লাগল, কারণ সেই আঘাত ছিল নিদারুণ ভয়ঙ্কর এক আঘাত।