আমাদের দু’জনের ওপর আহত কোকিলের
কণ্ঠস্বর ঝরে; রাত্রিস্রোত
গহন প্রবেশ করে সত্তার উন্মুখ তন্তুজালে।
সাপের মণির মতো
টিপ জ্বলে তোমার কপালে।
মহাশ্চর্য একটি নৃত্যকে তুমি শরীরে রেখেছো
লুকিয়ে, তোমার
গরম সোনার মতো ত্বকে
দূর শতাব্দীর রহস্যের বিচ্ছুরণ
কোনো কোনো রাত্রির ভেতরে এরকম কিছু থাকে
যা মনকে লতাগুল্মসমেত বাইরে
টেনে আনে এবং তখন
ক্রমাগত কী প্রচন্ড ওলটপালট হতে থাকে, অদৃশ্য ঝাপটে
হাত-পাখি ওড়ে
নীড়ের উদ্দেশ্য;
হৃদয়ে বৈশাখী-হাওয়া, ঠোঁটে
প্রলম্বিত স্পর্শ কাতরতা।
তোমার কপালে শিশুচুল গাছের পাতার মতো
ক্রীড়াপরায়ণ, ইচ্ছে হলো
ঈষৎ গুছিয়ে দিই, হৃদয়ে কেমন কোলাহল
স্তব্ধতায় শুয়ে আছে, বারবার সুলুক সন্ধান
ক’রে কথা কিছুই না পেয়ে বলে ফেলি
অন্ধকারে ফিসফিসের স্বরে-
‘তুমি কি পেয়েছো এই জীবনের মানে? আমি কিন্তু এখনও পাই নি।
রাত্রির চেয়েও
অধিক প্রগাঢ় কালো এবং ডাগর
চোখে তুমি আমাকে কয়েদ ক’রে কণ্ঠস্বরে হ্রদ
এনে বললে, ‘তাকাও আমার চোখে হৃদয়ের চোখ।
আলো অন্ধকারে কুহকিনী নাম্নী এক
অর্থময়তার কাছে পরাজয় মেনে ব’সে থাকি
ভীষণ নিশ্চুপ।
বিদায়ের আগে তুমি হঠাৎ যখন
আমার হাতকে দিলে তোমার মুঠোয়
গোপন আশ্রয়, ভাবলাম অনির্বচনীয় ঘোরে
প্রতিটি মুহূর্ত যদি দশ হাজার বছর হতো।।