প্রকৃত কে আমি এই মানুষের ব্যাপক মেলায়?
বেলা গেল মেঘে মেঘে, নানা খেলা খেলেছি এখানে
আবেগের ঘোড়ায় সওয়ার হয়ে নিজের বিষয়ে
স্থির জেনে কত কিছু, তবু বিছানায় আড়মোড়া ভেঙে
মনে হয়, যে আমি রাত্তিরে ছিল দুঃস্বপ্নে অস্থির
আর ভোরে যে আমি শিশির ভেজা ঘাস, কিয়দ্দূরে
সুপুরি গাছের সারি, ফিরোজা আকাশ, ফুলদানি,
খয়েরি শাড়ির, পায়রার ঝলসানি দেখে খুশি,
চা খেয়ে সংবাদপত্র পড়ে আনে ডেকে ছায়াছন্ন
ঘরে অবলীলাক্রমে হিস্পানী জগতে-এ দু’য়ের
মধ্যে কাকে আমি বলে করবো শনাক্ত বাস্তবিক?
যে ছিল অঞ্জলি পেতে সপ্তম শতকে অষ্টাদশী
গৌরীর সমুখে একা তৃষ্ণার দুপুরে, বৌদ্ধ মঠে
যার বাস, অনেক শতাব্দী আগে পটে ছবি এঁকে যিনি
হাটে করেছেন বিকিকিনি, কিংবা খাব-ঝলসিত
ইমরুল কায়েস, উটের পিঠে কাব্যের নেকাব
উন্মোচন করেছেন যিনি, সেই তো প্রকৃত আমি।
আবার কখনো মনে হয়, ধীমান হেরোডোটাস
আমি, ইতিহাস যার নর্মসখী, অথবা সুদূর
এথেন্সের আঁধার প্রকোষ্ঠে ওরা আমারই অধরে
দিয়েছিল ঢেলে কালকূট। কিংবা বলা যায়, যুগে
যুগে হেঁটে যায়-নির্দেশনাহীন কণ্টকিত পথে,
দুর্গম পর্বতে যে মানুষ স্বর্গ নরক এবং বিস্মৃতির প্রতি উদাসীন, আমি সেই দুঃখ-চাওয়া
নিঃসঙ্গ পথিক, রিক্ত, ক্লিষ্ট অগ্নিবলয়ের তাপে।