পুলিশ রিপোর্ট

এত উজ্জ্বলতা আমি কখনো দেখিনি।
সবখানে জ্বলজ্বলে ঝোপ; এত উজ্জ্বলতা, চোখ-অন্ধ-করা,
চৈতন্য-ধাঁধানো
উজ্জ্বলতা দেখেননি মুসাও কখনো।
হাতে নিয়ে পাকা লাঠি দেখলাম ওরা, সংখ্যাহীন
জ্বলজ্বলে ঝোপঝাড় এগোয় কেবলি। চতুর্দিকে তরঙ্গিত মাথা,
উত্তাল, উদ্দাম।

সড়কের দুকুল-ছাপানো
লোক, শুধু-লোক।
লোক,
আমাদের চোখের পাতায়
লোক।
লোক,
পাঁজরের প্রতিটি সিঁড়িতে
লোক।
লোক,
ধুকপুকে বুকের স্কোয়ারে
লোক।
হঠাৎ সে কোন তরুণের বুকের গভীর থেকে
কী যেন ফিনকি দিয়ে ছোটে, পড়ে আমার দু’হাতে।
রক্ত এত লাল আর এমন গরম
কখনো জানিনি আগে, ব্যারাকে পৌঁছেই ঘন ঘন
ধুই হাত ঘষে ঘষে,
অথচ মোছে না দাগ কিছুতেই সে তাজা রক্তের।
হোস পাইপের অজস্রতা পারে না মুছতে দাগ,
এ-দাগ ফেলবে মুছে এত পানি ধরে না সমুদ্রে কোনো দিন।

ঘড়িতে গভীর রাত, ব্যারাক নিশ্চুপ। বারান্দায়
করি পায়চারি আর হঠাৎ কখনো কানে ভাসে আসে
সমুদ্রের বিপুল গর্জন;
সুন্দরবনের সব বাঘ যেন আমার ওপর
পড়বে ঝাঁপিয়ে ক্ষমাহীন।

ঘুমোতে পারি না আমি কিছুতেই, ঘুমকে করেছি গুম খুন।
কেমন উৎকট গন্ধ লেগে রয় সকল সময়
আমার দু’হাতে আর সমস্ত শহরে।
সারাটা শহর যদি কেউ দিত ঢেকে
অজস্র সুগন্ধি ফুলে, তবে দুটি হাত গোপনে লুকিয়ে
রাখতাম সুরভিত ফুলের কবরে সর্বদাই।