পাশাপাশি

চুপচাপ ব’সে আছি শোভিত ড্রইংরুমে একা
এবং স্নানের ঘরে তুমি
শাওয়ারের নিচে নগ্ন। কব্জি-ঘড়িটার দিকে চোখ
বারবার রাখছি ব্যাকুল, আমি নিজের মনের
একপ্রস্থ খসখসে পোশাক খুলেই
সার্কাস দেখার মজা পেলাম পেল্লায়।

শো-কেসে গান্ধারা মুণ্ডু, জাপানি পুতুল, একজন
ব্রোঞ্জ মূর্তি, দেবী-টেবী হবে, হয়তোবা
মহেঞ্জোদারোর নটী কোনো।
কতদিন এইরূপ ছিমছাম পরিবেশে বসবার সুযোগ পাইনি।

হয়তো স্নানের ঘরে নিজেকে দেখছ অনাবৃতা,
জানালার ফাঁক দিয়ে বৃষ্টিভেজা নর্তকীর মতো
গাছটিকে তীব্র দেখছিলাম তখন।
সাবানে ঘষছ তুমি বগলের সবুজাভ ভূমি
সরার মতন স্তন, নাভিমূল, ঊরু
এবং ত্রিকোণ মাংসপিণ্ড, কী মঞ্জুল।
আমি কাল সারা রাত জেগে লেখা কবিতার কিছু
অত্যন্ত বিরক্তির, ক্লান্তিকর পংক্তি
তুমুল মার্জনা করে নিচ্ছিলাম মনের ভেতর।
যখন আঁটছো তুমি ব্রেসিয়ার, আমি
আমার দারুণ নগ্ন ইচ্ছাকে আবৃত
করার চেষ্টায় ক্লান্ত হচ্ছিলাম বড়।
যখন সুদীর্ঘ চুল বাঁধছিলে তুমি চূড়ো করে,
এলোমেলো ভাবনাগুলোর মধ্যে দ্রুত
ধবল চিরুনি চালাচ্ছিলাম কেবল।

তুমি এলে গুনগুনিয়ে, সারা ঘরে বিদেশী পারফিউম; বললে,
বলো তো কখন থেকে ব’সে আছ? তারপর
সোফায় বসলে চমৎকার, শাড়িতে সবুজ লতা,
খোঁপায় গোলাপ টকটকে, চলে হার্দিক সংলাপ; এরই মধ্যে
হঠাৎ পড়লে মনে, স্যান্ডেল বগলদাবা করে
বন্যার আবিল জল ঠেলে যেতে হবে, যেতে হবে বহুদূর।