নিশীথে আমাকে নিশিতে পেয়েছে ফের,
এ কার হস্তে বন্দী আমার ঘাড়?
মুণ্ডু চিবিয়ে খাবে টিবিটায় ব’সে;
পালাতে পারি না, এমন শক্তি তার।
গিলে খায় রাতে, দিবসে উগরে দ্যায়;
জারক রসের পিচ্ছিল কিছু দাগ
সত্তায় আঁকা, কশে তার হলাহল;
শয্যায় আজ উদ্যত কালনাগ।
অন্ধের মতো হেঁটে যাই অজ্ঞাতে,
ডাইনীর কটু পাচনের মতো নিশা।
রক্তে হাজার ঝিঁঝিঁ পোকা ডেকে যায়,
অমবস্যায় পাই না কোথাও দিশা।
মাটি ফুঁড়ে যেন বেরোয়া ঘুর্ণিঝড়,
ঝাঁকুনি ধরায় দেহের দেয়ালে চিড়।
ভেঙে চৌচির দিগন্ত- দর্পণ,
আকাশে আকাশে লাল সর্পের ভিড়।
মনে হয় কেউ সীমাহীন আক্রোশে
মাথাটা আমার কাদায় ফেলছে পুঁতে;
পাঁজরের খাঁচা ভাঙছে শাবল ঠুকে,
হাঁস ফাঁস শুধু, ভাসি বিচ্ছিরি মুতে।
চৌদিকে চলে ধ্বস্তাধ্বস্তি খুব,
কৌলীণ্যের ল্যাঠা গ্যাছে কবে চুকে;
বিলাসী ডিভানে গৌরী শায়িত একা,
পাহাড়ি শকুন চঞ্চু শানায় বুকে।
আমার আয়ুর মেয়াদ বৃদ্ধি হ’লে
ক্ষতি নেই শত নিশিডাক শুনলেও;
তার উদ্দেশে যাত্রা অব্যাহত,
আমার নিকটে কখনো আসবে সে-ও।
অদূরে মৃত্যু চাটছে নিজের ছায়া,
আঁধারে হীরক চির-ক্ষুধার্ত চোখ;
দীপ নেভানোর প্রতিভা মজ্জাগত,
সবার প্রাণেই গেঁথে দ্যায় গাঢ় শোক।
শহর ঘুমায়, কবির স্বস্তি নেই;
নিশীথে আমাকে পেয়েছে নিশিতে ফের,
রক্ত শোষণে মত্ত বাদুড় ঝোলে,
আমার শিরায় উৎপীড়নের জের।
৪।৩।৯০