খুব নাক-উঁচু এক অধ্যাপক
সেদিন বাসায় এসে বলে
গেলেন কবিকে, ‘আর কত,
এবার থামিয়ে দিন
লেখনীকে।‘ একজন নিম
কবি আসর মাতিয়ে
বলেছেন, ‘লোকটাকে নিয়ে
পারা যাচ্ছে না কিছুতে,
এক্ষুণি থামানো দরকার খর্বুটে
বৃদ্ধটিকে।‘
‘থামো বাপু, ঢের জঞ্জালের
স্তূপ তুমি
কাব্য মালঞ্চের কোণে জড়ো
ক’রে লুটেছ তারিফ সুপ্রচুর
অনর্থক, ঝুলিয়েছ গলায়
মেডেল। তাড়াতাড়ি কেটে
পড়ো’ বলে তাকে
কবিসভা গুলজার-করা বুড়ো,
আধবুড়ো আর জবর জোয়ান
পদ্য লিখিয়ের দল, বহুরূপী
কাব্যবিশারদ।
থামো থামো রব বর্ষীয়ান
কবিটিকে ঘিরে
ঘোরে মৌমাছির মতো,
ফোটায় সুতীক্ষ্ণ হুল; তিনি
খাতার পাতার দিকে দৃষ্টি
রেখে নিজেকে বলেন
খুব শান্ত কণ্ঠস্বরে-যে যাই
বলুক যত তুলুক আওয়াজ,
থামব না। যতদিন পলাশ,
কোকিল,
বাবুই পাখির বাসা, লতা
পাতা, মধ্যরাত, সকাল
বেলার
আলো, বয়ে-যাওয়া জলধারা,
মাছরাঙা, সপ্তর্ষিমন্ডল
থামতে বলে থামব না
ততদিন।
এই উচ্চাবচ রুক্ষ জীবনের
অনলস শ্রমের কসম
কবিতা ঝটিতি কেড়ে না
নিলে কলম থামবে না
কিছুতেই।
১৯.৩.৯৩