নিঃসঙ্গ যাত্রা

এ কেমন স্থানে আজ পা রেখেছি? এ কোন বিরান
জমিন আমাকে গ্রাস করবার জন্যে মুখের গহবর তার
উন্মুক্ত করেছে অকস্মাৎ? গাছপালা নেই, নেই জলাশয়,
পাখিও অনুপস্থিত, বোঝা যায়, বহুকাল থেকে
বন্য জন্তু কোথাও পড়ে না চোখে, তবুও হিংস্রতা চতুর্দিকে
গন্ডারের শৃঙ্গ হয়ে ধেয়ে আসে যেন; রক্ত হিম
করবার আয়োজন অত্যন্ত প্রবল, কিন্তু দৃশ্যত তেমন
ভয়ঙ্কর কিছু নেই সত্যি এ তল্লাটে।

আমাকে একাই হেঁটে যেতে হবে এখনো জানি না
কতদূর, পাড়ি দিতে হবে রুক্ষ পথ
আরো কতক্ষণ,
জানি না কিছুই। এই পথে আমার নিজের
বুকের ঘর্ঘরে কফ, নিষ্প্রভ নজর,
বিশীর্ণ পাঁজর, বুকজোড়া কষ্ট, নড়বড়ে হাত-পা
ছাড়া অন্য কোনো সঙ্গী নেই। পিতা-মাতা
জায়া-পুত্র-কন্যা, ভাই-বোন
অথবা বান্ধব কেউ নেই। এমনকি যাকে আমি
গৌরী গৌরী ব’লে
আকাশ পাতাল মর্ত্য উথাল পাথাল করি, সে-ও
নয় এই পথে আজ সঙ্গিনী আমার।

নিঃসঙ্গ পথিক আমি সর্বক্ষণ, এই রুক্ষ মাটি
কখন আমাকে গ্রাস ক’রে মুখ
বন্ধ করে নেবে, তারই তীব্র প্রতীক্ষায়
আছে নুড়ি, কর্কশ কাঁকর আর পোকা-মাকড়ের দল।
২৯/১১/৯৫