আমার দোয়েল মাকে, বহুদিন হলো কী ধূসর
দূর দেশে হারিয়ে ফেলেছি। মাথা খুঁড়ে
মরলেও ঠিকানা পাবো না কোনওকালে। সেই থেকে
বারবার ভস্ম ঢেকে ফেলে
আমাকে আপাদশির। কখনও সখনও প্রাণে গান
জেগে উঠলেও কণ্ঠে ভস্মরাশি জমে যায় শুধু!
কালেভদ্রে দোয়েলমাতাকে দেখি স্বপ্নের ভিতরে
স্বর্গীয় গানের সুরে লীন নীলহ্রদের কিনারে। জেগে উঠে
গান গেয়ে অন্তত নিজেকে
শুদ্ধ করে নিতে গিয়ে স্তব্ধতায় ডুবি, যেন সুর
আমাকে আলোয় নেয় অন্ধকার থেকে
অনন্য গহন মীড়ে। আমার দোয়েলমাতা বেদনায় মিশে
ধোঁয়ার কুণ্ডলী হয়ে চকিতে মিলায়
গুণীর তানের মতো।
দোয়েলমাতার ব্যর্থ, অধম সন্তান আমি, পড়ে
আছি একা ছিন্নভিন্ন পথের ধুলায়। মাঝেমাঝে
কণ্ঠ থেকে ভস্ম ঝরে যায় অকস্মাৎ, যে গান কখনও
লতিয়ে ওঠেনি কণ্ঠে, তারই সুর জাগে, সুর শুনে
গাছের তরুণী লতা, ফুলের অনূঢ়া কুঁড়ি, প্রজাপতি আর
হলুদ ধানের শীষ নাচে, সুনসান
নিশীথের বুকে জোনাকিরা ব্যালে-নাচ জুড়ে দেয়।
কোথাও অজানা দেশে আমার দোয়েলমাতা দীর্ঘ
কোমল নিদ্রায় আনন্দের আলিঙ্গনে মিশে গিয়ে
ভস্মস্তূপে নতুন সুরের জন্ম দেয়, রেশ যার
আমাকে বাজায়, নিয়ে যেতে চায় অনন্তের তটে……
১৩.৩.২০০০