একজন সম্প্রতি নিজের মধ্যে কিছু স্বপ্নহীন
প্রহরের অত্যন্ত ফ্যাকাশে
আলোড়ন অনুভব করে। তার চারপাশে কত
কিছু হচ্ছে প্রতিদিন, ঐ
হল্দে বাড়িটার ছাদে পাখি নেমে আসে আলগোছে
একটি সবুজ পোকা খেলা করে গাছের পাতায়,
কুমোর গড়ছে মূর্তি হরেক রকম, নব্য যুবা শিস দিয়ে
ঘরে ফেরে মধ্যরাতে,
মধ্যবিত্ত খাটে
ঘুমিয়ে তরুণী দ্যাখে সাত মহলের স্বপ্নচ্ছবি।
সে নিজে এসব থেকে অত্যন্ত বিচ্ছিন্ন, আজ শুধু
মনে পড়ে তার
একদা সে চেয়েছিল পটারির কারুকাজে মগ্ন হয়ে দূর
নীল মিনারেটে পৌছে যেতে।
দু’-তিন সপ্তাহ ধরে কাটে না সে দাড়ি, পড়ে না কেশরে তেল
কতদিন, চুল তার কেশর বলেই খ্যাত! বৈফল্যের শ্মশানের কালো
ধোঁয়ায় সতত উপদ্রুত ইদানীং, রাত্তির গভীর হলে
কী এক নিজের খেলা তাকে
ভীষণ জাগিয়ে রাখে, বস্তুবোধ থেকে খানিক আড়ালে রাখে,
কেমন ভূপর্যটন চলে সারাক্ষণ আস্তে সুস্থে
মনের ভিতরে,
কখনো হিংস্রতা, যোগসূত্রহীন, তড়াক লাফিয়ে ওঠে
এবং আয়ুর পাতা ওড়ে চোখের পাতায়, পটারির
কথা ভাবে মাঝে-মাঝে, মন
ভারাক্রান্ত হয়-কোন্ মৃগ ডেকে নিয়ে গেছে গভীর জঙ্গলে
তাকে, সে এখন ভাবে। যাত্রা করে বারংবার মানুষের
দ্বীপপুঞ্জে, খোঁজে
যোগসূত্র অস্তিত্বের সঙ্গে দ্যুলোক ভূলোক ইত্যাদির।
প্রত্যহ চুম্বন নিয়ে গ্রন্থের পাতার জেনে গেছে
বৃথাই বুঝতে চাওয়া সব খুঁটিনাটি।
বোধের ওপারে আছে জলরাশি, অগাধ রহস্যে খলখলে।
সে তার নিজের কাছ থেকে কবে যে হারিয়ে গেছে,
বুঝতে পারে নি নিজে। কিছু ভস্ম, পদচিহ্ন কিছু
দেখে দেখে ক্লান্ত লাগে, বড়ো ক্লান্ত লাগে, কী বিমুখ
মুখচ্ছবি করে আনাগোনা অন্তর্লীন কুয়াশায়,
বুকের ওপরে তার একরাশ শুক্নো পাতা বড়ো
দীর্ঘস্থায়ী হয়, গুহাস্থিত ঝাঁক ঝাঁক কালো পাখি
নিয়ত ঠোকর মারে। নিজের ভিতরে তার ক্ষিপ্র তেজস্ক্রিয়া,
ভস্মরাশি অন্তর্গত ল্যান্ডস্কেপ পাল্টে ফ্যালে, যেম অন্য কেউ
চোখ মেলে দূরাগত বিনষ্ট ভেলায়।
বাড়িয়ে নিঃসঙ্গ হাত অবেলায় কাকে খোঁজে ঠোঁটে নিয়ে নুন?